আসমানি গ্রন্থসমূহের নিদর্শনাবলী (শেষ পর্ব)

আসমানি গ্রন্থসমূহের নিদর্শনাবলী (শেষ পর্ব)"

(পূর্ব প্রকাশের পর)

(৯) বায়তুল মুকাদ্দাস আল আকসা মসজিদ :

বায়তুল মুকাদ্দাস আল আকসা মসজিদ পবিত্র নগরী জেরুজালেমে অবস্থিত। এটি ৭১০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ১,৪৪,০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। প্রথম ক্বিবলা, পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ। হযরত মুহাম্মদ (স)-এর শবে মেরাজের রাতে মসজিদুল আকসা ‘মধ্যবর্তী স্টেশন’ হিসেবে ব্যবহূত হয়েছিল। শবে মেরাজের প্রথম পর্যায় ছিল মসজিদুল হারাম (ক্বাবা শরীফ) থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় পর্যায় ছিল মসজিদুল আকসা থেকে ঊর্ধ্বলোক। এ প্রসঙ্গে কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “তিনি পবিত্র যিনি স্বীয় বান্দাকে (মুহাম্মদ স.) রাত্রিবেলা মসজিদ হারাম (ক্বাবা শরীফ) হতে মসজিদে আকসা (বায়তুল মুকাদ্দাস) পর্যন্ত লইয়া গেলেন, যাহার চতুর্ষ্পাশে আমি নানাবিধ বরকত প্রদান করিয়া রাখিয়াছি যেন আমি তাহাকে দেখাই স্বীয় নিদর্শনসমূহ। নিশ্চয় তিনি খুব শ্রবণকারী, খুব দর্শনকারী।” (সূরা বনী ইসরাইল ১৭ : ১) মর্যাদাপূর্ণ এ মসজিদটির নির্মাণ কার্য যবুর কিতাব প্রাপ্ত হযরত দাউদ (আ) শুরু করলেও তার পুত্র হযরত সোলায়মান (আ) জ্বীনদের সাহায্যে সাত বছর ধরে নির্মাণ কাজ শেষ করেন। বাদশাহনামায় বর্ণিত হয়েছে,“সোলায়মানের রাজত্বের চতুর্থ বছরের সিব মাসে অর্থাত্ দ্বিতীয় মাসে সোলায়মান মাবুদের ঘরটি তৈরি করতে শুরু করলেন। বাদশাহ সোলায়মান মাবুদের জন্য যে ঘরটি তৈরি করেছিলেন তা লম্বায় ছিল ষাট হাত, চওড়ায় বিশ হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত। বায়তুল মুকাদ্দাস তৈরি করবার সময় সেখানে কোনো হাতুড়ি, কুড়াল কিংবা অন্য কোনো লোহার যন্ত্রপাতির আওয়াজ শোনা গেলো না। নিচেরতলায় ঢুকবার পথ ছিল বায়তুল মুকাদ্দাসের দক্ষিণ দিকে, সেখান থেকে একটা সিঁড়ি দোতলা এবং তারপরে তিনতলায় উঠে গেছে। এভাবে তিনি বায়তুল মুকাদ্দাস তৈরি করেছিলেন এবং শেষও করেছিলেন।” (বাদশাহনামা ৬:১—৯) হযরত দাউদ (আ)-এর উপর অবতীর্ণ জবুর শরীফে উল্লেখ আছে, “হে আল্লাহ, তোমার ঘরের (বায়তুল মুকাদ্দাস) মধ্যে তোমার অটল মহব্বতের কথা আমরা ধ্যান করেছি।” (জবুর শরীফ ৪৮:৯) হযরত ঈসা (আ) এর উপর অবতীর্ণ ইঞ্জিল শরীফের ‘পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসে হযরত ঈসা মসীহ’ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে, “পরে ঈসা বায়তুল মুকাদ্দাসে ঢুকলেন। যারা কবুতর বিক্রি করছিল তাদের বসবার জায়গা উল্টে দিয়ে বললেন, “পাক কিতাবে আল্লাহ বলেছেন,‘আমার ঘরকে এবাদত ঘর বলা হবে’ কিন্তু তোমরা এটাকে ডাকাতের আড্ডাখানা করে তুলেছ।” (প্রথম খণ্ড - মথি ২১ : ১২-১৩, দ্বিতীয় খণ্ড - মার্ক ১১ : ১৫-১৭, তৃতীয় খণ্ড - লুক ১৯ : ৪৫, চতুর্থ খণ্ড - ইউহেন্না ২ : ১৪-১৬) তাছাড়া তৃতীয় খণ্ড লুক এ ‘বায়তুল মুকাদ্দাসে শিশু ঈসা’ এবং ‘বায়তুল মুকাদ্দাসে বারো বছরের হযরত ঈসা মসীহ’ অধ্যায়ে বায়তুল মুকাদ্দাস সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

(১০) বাদশাহ সোলায়মান (আ)-এর রাজপ্রাসাদ :

মানব-দানব, জ্বীন, পশু-পাখি, পিপীলিকা ও বাতাসের বাদশাহ হযরত সোলায়মান (আ)। তিনি জ্বীনদের সাহায্যে তেরো বছর ধরে বায়তুল মুকাদ্দাস সংলগ্ন একটি রাজপ্রাসাদ নির্মাণ করেন। নবীদের কিতাব বাদশাহনামায় ‘বাদশাহ সোলায়মান (আ)-এর রাজবাড়ী তৈরি অধ্যায়ে উল্লেখ আছে:“ রাজবাড়ীতে তিনি লেবানন-বন কুটির নামে একটা ঘর তৈরি করেছিলেন। এই ঘরটা একশ’ হাত লম্বা, পঞ্চাশ হাত চওড়া ও ত্রিশ হাত উঁচু ছিল। এর কাঠের চার সারি থামের উপর এর কাঠের ছেঁটে নেওয়া বীমগুলো বসানো ছিল। বিচার কুটির নামে তিনি একটা ঘর তৈরি করলেন, সেখানে তার সিংহাসন ছিল। বিচার করবার জন্য এই ঘরটা তৈরি করা হলো। যে ঘরে তিনি বাস করবেন সেটা বিচার কুটিরের পিছনে একই নমুনায় তৈরি করা হলো। রাজবাড়ীর বড় উঠান এবং সমস্ত দালানগুলোর ভিত্তি থেকে ছাদের কার্নিশ পর্যন্ত সবই ঠিক মাপে কাটা দামি পাথর দিয়ে।” (বাদশাহনামা ৭ : ২-১০) সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ কুরআন শরীফে উল্লেখ আছে:“ তাকে (রাণী বিলকিস) বলা হলো:
“প্রাসাদে প্রবেশ করো, তারপর যখন সে তাকে একটি স্বচ্ছ জলাশয় মনে করলো এবং তার উভয় পায়ের গোছা খুলে ফেললো, তিনি (সোলায়মান) (আ) বললেন এটা তো কাঁচের স্বচ্ছ প্রাসাদ। সে (রাণী বিলকিস) বললো: “হে আমার প্রতিপালক ! আমি অবশ্যই আমার নিজের প্রতি জুলুম করেছি, এখন আমি সোলায়মানের সাথে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি অনুগত হয়ে গেলাম।”(সূরা নমল ২৭ :৪৪) বাদশাহনামা ও কুরআন শরীফে বর্ণিত কারুকার্যমণ্ডিত রাজপ্রাসাদটি আল্লাহর নবী বাদশাহ সোলায়মান (আ) এর প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের নিদর্শন।

(১১) ইউসুফ (আ)-এর কূপ :

পৃথিবীর সুন্দরতম মানুষ ইউসুফ (আ)। তিনি ইসহাক (আ)-এর পুত্র, ইসমাইল (আ)-এর নাতি এবং ইব্রাহীম (আ)-এর প্রপৌত্র। ইউসুফ (আ) আল্লাহর নবী এবং মিসরের বাদশাহ ছিলেন। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে ১২ নং সূরা ইউসুফ নাজিল করেছেন। কুরআন শরীফে ইউসুফ (আ)-এর নাম ২৬ বার বলা হয়েছে। ইউসুফ (আ), হযরত ইয়াকুব (আ)-এর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। হযরত ইয়াকুব (আ) ইউসুফকে (আ) খুব ভালবাসতেন। তাই হিংসার বশবর্তী হয়ে বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা ইউসুফকে (আ) হত্যার উদ্দেশ্যে একটি কূপে ফেলে দিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে হযরত মুসা (আ)-এর উপর অবতীর্ণ আসমানি গ্রন্থ তাওরাত শরীফের ‘হযরত ইউসুফকে (আ) হত্যা করবার ষড়যন্ত্র’ অধ্যায়ে উল্লেখ আছে “সে (রুবেন) তাদের পরামর্শ দিয়ে বলল: খুন-খারাবি করতে যেও না। ওর গায়ে হাত না তুলে বরং ওকে এই মরুভূমির এই গর্তটার মধ্যে ফেলে দাও। তারপর তারা তাকে ধরে সেই গর্তের মধ্যে ফেলে দিল। গর্তটায় কোনো পানি ছিল না, সেটা খালি ছিল” (পয়দায়েশ ৩৭:২২-২৪) সর্বশেষ রসূল হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর উপর অবতীর্ণ সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ কুরআন শরীফেও বর্ণিত হয়েছে: “হয় ইউসুফকে মারিয়া ফেল অথবা তাহাকে কোনো স্থানে ফেলিয়া আসো, অনন্তর যখন তাহারা লইয়া গেলো এবং সকলে দৃঢ় সংকল্প করিল যে, তাহাকে কোনো গভীর কূপে ফেলিয়া দিবে এবং সংকল্প অনুযায়ী কূপে ফেলিয়া চলিয়া গেলো”। (সূরা ইউসূফ ১২:৯,১৪) আসমানি কিতাব তাওরাত ও কুরআন শরীফে বর্ণিত এ কূপটি ফিলিস্তিনে অবস্থিত।

(সমাপ্ত)

★. Copyright : ©. " ইত্তেফাক "
(শুক্রবার ১৪ অক্টোবর ২০১৬, ২৮ আশ্বিন ১৪২৩)
গ্রন্থনা : মো. কামরুজ্জামান।
প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, টিএন্ডটি বিশ্ববিদ্যালয়
কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা ও পিএইচডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

*** News link: http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/dormo-chinta/2016/10/14/149455.html

*** নোটঃ - (প্রয়োজনীয় মূর্হুতে খুঁজে পেতে পোষ্টটি শেয়ার করে এর লিংক সেইভ রাখুন। না হলে পরে আবার খুঁজতে হবে ...)

﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Islamic Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

*** Image source : ©

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 18.06.2018 || 🇧🇩