সোমবার, ১৮ জুন, ২০১৮

আসমানি গ্রন্থসমূহের নিদর্শনাবলী (৩য় পর্ব)

"ধর্ম ও জীবন : আসমানি গ্রন্থসমূহের নিদর্শনাবলী (৩য় পর্ব)"

( পূর্ব প্রকাশের পর)

(৭) ফেরাউনের মরদেহ:

হযরত মুসা (আ) এর বর্ণনা পবিত্র কুরআনে বেশিবার এসেছে। সে সময় মিসরের শাসক ছিলেন নিজেকে প্রভু দাবিকারী ফেরাউন। আল্লাহর রসূল হযরত মুসা (আ) ঈমানের দাওয়াত দিয়ে ফেরাউনের নিকট যান এবং মুযেজা দেখান। কিন্তু ফেরাউন মুসা (আ) কে মিসর থেকে বিতাড়িত করতে চেষ্টা করে। আল্লাহর আদেশে হযরত মুসা (আ) মিসর থেকে নীল নদের তীরে এসে উপস্থিত হন। পশ্চাতে ফেরাউন, রাজন্যবর্গ ও সৈন্যগণ। আল্লাহর আদেশে হযরত মুসা (আ) নীল নদে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করলেন এবং পানি দ্বিখণ্ডিত হয়ে নদীর মাঝখানে
রাস্তা হয়ে গেল। হযরত মুসা (আ) ও ইসরাইলিরা নদী পার হয়ে গেলেন। ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী মুসা (আ) কে ধরার জন্য রাস্তায় নেমে পড়ল। আর তখনই উভয় দিকের পানি পূর্বের অবস্থানে এসে পৌঁছাল। আর ফেরাউন সদলবলে নিমজ্জিত হল। এ প্রসঙ্গে তাওরাত শরীফের ‘লোহিত সাগরে আল্লাহর অলৌকিক চিহ্ন’ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘সমুদ্রের পানি ফিরে এসে রথ ও ঘোড়া সাওয়ারদের, অর্থাত্ বনি ইসরাইলদের পিছনে তাড়া করে আসা ফেরাউনের গোটা সৈন্যদলটাকে ডুবিয়ে দিল। তাদের একজনও আর বেঁচে রইল না।’ (হিজরত ১৪:২৮) ফেরাউনের পরিণতি সম্পর্কে সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ কুরআন শরীফে উল্লেখ রয়েছে, “আমি বনি ইসরাইলদিগকে সমুদ্র পার করাইলাম এবং ফেরাউন ও তাহার সৈন্যবাহিনী বিদ্বেষ পরবশ হইয়া ন্যায়ের সীমা লঙ্ঘন করিয়া তাহাদিগের পশ্চাদ্ধাবন করিল। পরিশেষে যখন সে (ফেরাউন) নিমজ্জমান হইল, তখন সে বলিল, ‘আমি ঈমান আনিলাম, কোনো ইলাহা নাই সেই আল্লাহ ছাড়া, যে আল্লাহর উপর বনি ইসরাইলগণ বিশ্বাসী এবং আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ আল্লাহ উত্তর দিলেন, ‘কি? এখন! পূর্বে তুমি তো অমান্য করিয়াছিলে এবং অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে; আজ কেবল তোমার মৃত দেহকেই রক্ষা করিব যাহাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হইতে পার।” (সূরা ইউনুস : ৯০-৯২) কুরআন শরীফের এই আয়াতের শেষে আল্লাহ তায়ালা ফেরাউনের লাশকে পরবর্তী উম্মতের জন্য নিদর্শন স্বরূপ রক্ষার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন। উপরের ফেরাউনের সংরক্ষিত মরদেহটি সেই প্রতিশ্রুতিরই নিদর্শন। অন্য আয়াতে বর্ণিত আছে, ‘তাই সে চাইল তাদেরকে দেশ থেকে (মিসর) থেকে বের করে দিতে। সেজন্য আমি তাকে ও তার সব সাথীকে ডুবিয়ে দিলাম।’ (সূরা ইসরা— ১০৩) পবিত্র তাওরাত শরীফে গীত সংহিতার ১৩৬, ১৫ স্তোত্রে আল্লাহকে শুকরিয়া জানানো হয়েছে, ‘কেননা তিনি ফরৌন ও তাহার বাহিনীকে সুফ সাগরে নিমজ্জিত করিলেন।’ ১৮৯৮ সালে মিসর তত্ত্ববিদ মি. লরেট নীল নদের পাড়ে অবস্থিত
লুকসুর এর থিবিসের নেক্রোপলিস রাজকীয় উপত্যকা থেকে মমিটি আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে ফেরাউনের মমিটি মিসরের রাজধানী কায়রোর তাজবীরে জাতীয় জাদুঘরে রয়াল মমিজ কক্ষে মমিটি সংরক্ষিত রাখা হয়েছে পরবর্তীদের নিদর্শনের জন্যই।

(৮) তুর পাহাড়:

তুর পাহাড় বা তুর-ই-সিনাই বা সিনাই পর্বত বা জবল মুসা। এটি পূর্ব মিসরে অবস্থিত। এর বিস্তৃতি ভূমধ্যসাগর হতে লোহিত সাগর পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালা তুর পাহাড়কে নিয়ে পবিত্র কুরআন শরীফে ৫২ নং ‘সূরা তুর’ নাযিল করেছেন এবং তুর পাহাড়ের নামে দু’ বার কসম খেয়েছেন। ‘ওয়া তুর’- ‘শপথ তুরের’, (সূরা তুর ৫২:১) এবং ‘ওয়া তুরি সীনীন’-‘শপথ তুরে সীনীনের’ (সূরা তীন ৯৫:২)। তাওরাত শরীফে তুর পাহাড়কে আল্লাহর পাহাড় এবং পবিত্র পাহাড় বলে অভিহিত করা হয়েছে। হযরত মুসা (আ) তুর পাহাড়েই আল্লাহর সাথে সাক্ষাত্, নবুওয়াত এবং দুইটি প্রস্তর খণ্ডে লিখিত তাওরাত শরীফ লাভ করেছিলেন। তাওরাত শরীফের দ্বিতীয় খণ্ড হিজরত-এ ‘হযরত মুসা (আ) এর প্রতি মাবুদের ডাক’ অধ্যায়ে উল্লেখ আছে, ‘ ছাগল ভেড়ার পাল চরাতে চরাতে মুসা আল্লাহর পাহাড়, তুর পাহাড়ে গিয়ে পৌঁছালেন। সেখানে একটা ঝোপের মাঝখানে জলন্ত আগুনের মধ্যে থেকে মাবুদের ফেরেশতা তাকে দেখা দিলেন। মুসা দেখলেন যে, ঝোপটাতে আগুন জ্বললেও সেটা পুড়ে যাচ্ছে না। এই ব্যাপার দেখে তিনি মনে মনে বললেন, ‘‘আমি এক পাশে গিয়ে এই আশ্চর্য ব্যাপারটা দেখব, দেখব ঝোপটা পুড়ে যাচ্ছে না কেন? ’ ঝোপটা দেখবার জন্য মুসা একপাশে যাচ্ছেন দেখতে, মাবুদ আল্লাহ ঝোপের মধ্যে থেকে ডাকলেন, ‘মুসা, মুসা’। মুসা বললেন, ‘এই যে আমি।’ মাবুদ বললেন, ‘আরো কাছে এসো না, তুমি পবিত্র জায়গায় (তুর পাহাড়) দাঁড়িয়ে আছ। তোমার পায়ের জুতা খুলে ফেল। আমি তোমার পিতার আল্লাহ, আমি ইব্রাহিম, ইসহাক ও ইয়াকুবের আল্লাহ।” একই রকম বর্ণনা সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ কুরআন শরীফে উল্লেখ আছে, ‘কিন্তু সে যখন ওটার (আগুনের) কাছে এল, (একটা আওয়াজ শুনল) হে মুসা! আমিই তোমার রব কাজেই তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেল, তুমি তো এখন তুয়া নামক উপত্যকায় দণ্ডায়মান।’ (সূরা ত্বা-হা ২০ : ১১—১২) বনি ইসরাইলরা ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে বিরোধিতা শুরু করলে আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর তুর পাহাড় তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ আছে, ‘আর তোমাদের ওয়াদা নিলাম, পর্বতকে (তুর পাহাড়) তোমাদের উপর তুলে ধরলাম, (এই বলে) তোমাদের যা দিলাম তা শক্ত করে ধর ও তাতে যা আছে মনে রেখ, যাতে তোমরা তাকওয়াতে চলতে পার।’ (সূরা বাকারাহ ২:৬৩)। এ তুর পাহাড়েই আল্লাহপাকের নূরের তাজাল্লী প্রকাশিত হয়েছিল। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা আরাফ এ উল্লেখ আছে, “যখন মুসা তার রবের ঠিক করে দেয়া সময় হাজির হল, তখন তার রব তার সাথে কথা বললেন, সে বলল, ‘আমার রব! আপনি দেখা দিন, যেন আমি আপনাকে দেখতে পাই।’ আল্লাহ বললেন, ‘তুমি আমাকে কোনো মতেই দেখতে পাবে না। তবে তুমি পাহাড়ের (তুর পাহাড়) দিকে তাকিয়ে থাক, যদি সেটা নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে, তবে তুমি আমাকে দেখবে।’ অতঃপর যখন তাঁর রব তাজাল্লী প্রকাশ করলেন, তখন সে তাজাল্লী পাহাড়কে চূর্ণ, বিচূর্ণ করে দিল এবং মুসা বেহুঁশ হয়ে ভূ-তলে পতিত হলেন। যখন মুসা হুঁশ প্রাপ্ত হলেন তখন বললেন, ‘সমস্ত গৌরব আপনারই, আমি আপনার দিকেই ফিরলাম ও মুমিন হওয়ার মধ্যে আমিই প্রথম থাকলাম।” (সূরা আরাফ ৭:১৪৩)। আল্লাহপাকের নূরের তাজাল্লী প্রাপ্ত বলেই পৃথিবীর এ পবিত্র নিদর্শন তুর পাহাড়টির এমন রঙিন আভা!

(চলবে...)

★. Copyright : ©. " ইত্তেফাক "
(শুক্রবার ০৭ অক্টোবর ২০১৬, ২২ আশ্বিন ১৪২৩)
গ্রন্থনা : মো. কামরুজ্জামান।
প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, টিএন্ডটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা ও পিএইচডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

News Link : http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/dormo-chinta/2016/10/07/148105.html

*** নোটঃ - (প্রয়োজনীয় মূর্হুতে খুঁজে পেতে পোষ্টটি শেয়ার করে এর লিংক সেইভ রাখুন.. না হলে পরে আবার খুঁজতে হবে ...)

﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Islamic Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

*** Image source : ©

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 18.06.2018 || 🇧🇩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা...

**প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা... ১) মন শুধু মম ছুঁয়েছে- সোলস ২)নিঃস্ব করেছ আমায় - শাফিন ৩)ফিরিয়ে দাও- মাইলস ৪)শ্রাবনের মেঘগু...