★. 'লাইফ লেসনস এবং ভাবনা সপ্তবিংশ' :
---------- ©. Sushanta Paul.
**. " লাইফ লেসনস্ ( Life Lessons ) " :
------------------------------------------------------------------
আমি কিছু জিনিস মেনে চলার চেষ্টা করি। সেগুলির মধ্যে এই লেখাটি লেখার সময় মাথায় এসেছে, এমন কিছু কিছু শেয়ার করছি :
*এক। প্রতিদিন ঘুমান গড়ে সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা। বেশি সময় নয়, ভালভাবে ঘুমানোই বড় কথা। ঘুমানোর সময় অবশ্যই মোবাইল সাইলেন্ট করে আর ল্যাপটপ দূরে রেখে ঘুমাবেন।
*দুই। মোবাইলের ড্রাফ্টসে কিংবা একটা নোটবুকে আপনার মাথায় বিভিন্ন মুহূর্তে যে ভাল ভাল কথা কিংবা চিন্তাভাবনা আসে, সেগুলি লিখে রাখবেন। সাধারণত খুব সুন্দর চিন্তাগুলি দুইবার আসে না।
*তিন। প্রতিদিন ৩০ মিনিট নিয়ম করে কোন একটা মোটিভেশনাল বই পড়ুন কিংবা লেকচার শুনুন। এ সময় নিজের ইগোকে দূরে রাখবেন।
*চার। কোন সময় মন যদি খুব অশান্ত হয়ে যায়, এবং কিছুতেই সেটাকে শান্ত করা না যায়, তবে ১০ মিনিট হাঁটুন আর হাঁটার সময় নিজের পদক্ষেপ গুনুন। আরেকটা কাজ করতে পারেন। সেটি হল, মাথা থেকে সমস্ত চিন্তা বের করে দিয়ে মাথাটাকেসম্পূর্ণ ফাঁকা করে দিয়ে চুপ করে ১০ মিনিট আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা। বিবেকানন্দের পত্রাবলী কিংবা রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্র পড়তে পারেন, রবীন্দ্রসংগীত শুনতে পারেন। মন শান্ত হয়ে যাবে।
*পাঁচ। প্রতিদিন সকালে উঠে সেদিন কী কী কাজ করবেন, সেটি একটা কাগজে ১০ মিনিটে লিখে ফেলুন। কাগজটি সাথে রাখুন। আগের দিনের চাইতে অন্তত একটি হলেও বেশি কাজ করার কথা লিখবেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মিলিয়ে নিন, সবগুলি করতে পেরেছেন কিনা।
*ছয়। স্টুপিডদের সঙ্গ এড়িয়ে চলুন কিংবা আপনার আশেপাশের লোকজনকে ভাল কিছু করার উৎসাহ দিন। আপনার আশেপাশের বন্ধুদের কাজ করার ধরণ এবং সফল হওয়ার অভ্যেস আপনাকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনার স্বামী যত স্টুপিড হবে, আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্টুপিড হওয়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে। স্টুপিড স্ত্রী অপেক্ষা স্টুপিড স্বামী পরিবারের জন্য বেশি বিপদজনক। আমি ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেছি, বাবা যতক্ষণই কাজে থাকতেন, ততক্ষণ খুশিমনে থাকতেন। তখন থেকে আমার মধ্যে এই ধারণা হয়ে যায়, কাজের মধ্যে থাকলে খুশি থাকা যায়। আপনার ফ্যামিলি থেকে যা শিখেছেন, সেটা থেকে বেরিয়ে আসা সহজ নয়। তাই আপনি এমন কিছু আপনার ফ্যামিলিতে করবেন না, যেটা আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে ওভাবে করেই ভাবতে শেখাবে।
*সাত। যে কাজটা করা দরকার, সে কাজে জেদি হওয়ার চেষ্টা করুন। কাজটার শেষ দেখে তবেই ছাড়ুন।
*আট। যিনি আপনাকে তার জীবনে অপরিহার্য মনে করেন না, তাকে আপনার জীবনে অপরিহার্য মনে করার বাজে অভ্যেস থেকে সরে আসুন। যে মানুষটা আপনাকে ছাড়াই সুস্থভাবে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন, তার জন্যে দম আটকে মরে যাওয়ার তো কোন মানে হয় না। আপনি যত বেশি তার জন্য ফিল করবেন, তিনি তত বেশি এক ধরণের অসুস্থ জয়ের আনন্দ উপভোগ করবেন। ভুল মানুষকে ভুলে থাকতে জানাটা মস্ত বড় একটা আর্ট। আপনি কত সময় ধরে তার সাথে ছিলেন, সেটা বড় কথা নয়; বরং সামনের সময়টাতে কত বেশি তাকে জীবন থেকে ডিলিট করে থাকতে পারবেন, সেটাই বড় কথা।
*নয়। খুব দ্রুত পড়ার অভ্যাস করুন। পড়ার সময় কীভাবে অপ্রয়োজনীয় অংশগুলিতে চোখ বুলিয়ে যেতে হয়, সেটা শিখুন। প্রয়োজনীয় অংশগুলি দাগিয়ে দাগিয়ে বারবার পড়ুন এবং মাথায় সেগুলির একটা ফটোকপি রেখে দিন। এতে আপনার পড়ার কাজটা করার সময় কমে যাবে।
*দশ। আপনার বর্তমান অবস্থার দিকে তাকান। দেখবেন, কিছু কিছু বিষয়ে স্রষ্টার অনুগ্রহে আপনি অনেক বিপদ কিংবা দুর্ভাগ্য থেকে বেঁচে গেছেন এবং ভাল আছেন। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে শুকরিয়া আদায় না করে ঘুমাবেন না। কৃতজ্ঞতাবোধ সম্মান, মানসিক শক্তি এবং শান্তি এনে দেয়।
*এগারো। দ্য সিক্রেট, আউটলায়ারস, দ্য সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি এফেক্টিভ পিপল, দ্য পাওয়ার অব নাউ, দ্য মঙ্ক হু সোল্ড হিজ ফেরারি, ইউ ক্যান উইন সহ বিভিন্ন মোটিভেশনাল বইপত্র পড়ুন। বিভিন্ন গ্রেটম্যানদের বায়োগ্রাফি বেশি বেশি পড়ুন। দ্য প্রফেট, গীতবিতান এবং বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ অনুভব করে পড়ুন। এসব বই পড়ার সময় অবশ্যই বিশ্বাস করে পড়তে হবে। যদি আপনি পৃথিবীতে সবকিছুই যুক্তি দিয়ে বিচার করেন, তবে পৃথিবীতে বেঁচে থাকাটা আপনার জন্য কঠিন হতে পারে। তবে বইগুলিতে যা যা আছে, সেগুলির মধ্য থেকে আপনার দরকারি জিনিসগুলিকেই গ্রহণ করুন।
*বার। মাসে অন্তত দুইদিন রোযা রাখুন। রোযা মানসিক শক্তি বাড়ায়, সহনশীল এবং বিনীত হতে শেখায়।
*তের। ব্যাগে অন্তত একটি ভাল বই রাখুন আর সুযোগ পেলেই পড়ুন। মোবাইলেও পিডিএফ আকারে বই রাখতে পারেন।
*চৌদ্দ। প্রতিদিন অন্তত একজন ব্যক্তিকে সাহায্য করুন কিংবা ক্ষমা করে দিন। এতে আপনার নিজের প্রতি সম্মানবোধ বাড়বে। নিজেকে সম্মান করুন সবচাইতে বেশি।
*পনের। সপ্তাহে একদিন বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভোর হওয়া দেখুন। এটি আপনার ভাবনাকে সুন্দর করতে সাহায্য করবে।
*ষোলো। একটা সহজ বুদ্ধি দিই : অন্য মানুষকে সম্মান করে না, এমন লোকের সঙ্গ এড়িয়ে চলুন। উদ্ধত লোকের কাছ থেকে তেমন কিছুই শেখার নেই।
*সতেরো। নিজের চারিদিকে একটা দেয়াল তৈরি করে রাখুন। সে দেয়ালেঘেরা ঘরে আপনি নিজের মতো করে নিজের কাজগুলি করার জন্য প্রচুর সময় দিন। এতে আপনি অন্যদের চাইতে একই সময়ে বেশি কাজ করতে পারবেন। সবাইকেই সময় দিলে আপনি নিজের কাজগুলি ঠিকমতো করতে পারবেন না।
আঠারো। প্রতিদিন একটা ভাল বইয়ের অন্তত ৩০ পৃষ্ঠা না পড়ে ঘুমাতে যাবেন না। ফেসবুকিং করার সময় বাঁচিয়ে বই পড়ুন। বই পড়ে, এমন লোকের সাথে মিশুন। যে ছেলে কিংবা মেয়ে বই পড়ে না, তার সাথে প্রেম করার কিছু নেই। আর যদি ভালবেসেই ফেলেন, তবে তাকে বইপড়া শেখান।
*উনিশ। আপনার চাইতে কম মেধা আর বুদ্ধিসম্পন্ন লোকজনের সাথে সময় কম কাটান। তবে কখনওই তাদেরকে আঘাত করে কোন কথা বলবেন না। একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তির সাথে একবার কথা বলা ২০টা বই পড়ার সমান। ভুল লোকের সাথে সময় কাটানোর চাইতে একা একা থাকা ভাল।
*বিশ। প্রতিদিন আপনি যতটুকু কাজ করতে পারেন, তার চাইতে কিছু বাড়তি কাজ করুন। বাড়তি কাজটি ঠিকভাবে করতে পারলে নিজেকে কিছু কিছু উপহার কিনে দিন, কিংবা করতে ভাল লাগে, এমন কোন কাজ করুন।
*একুশ। সপ্তাহে একদিন ঘড়ি এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে একেবারে নিজের মতো করে সময় কাটান। সেদিন বাইরের পুরো দুনিয়া থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন এবং যা যা করতে ভাল লাগে কিন্তু ব্যস্ততার কারণে করা হয় না, সেসব কাজ করে ফেলুন।
*বাইশ। মাথায় যদি কোন উল্টাপাল্টা কিংবা নেতিবাচক চিন্তা আসে, তবে সেটিকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করবেন না; বরং আপনি নিজে সেটি থেকে বেরিয়ে আসুন।
*তেইশ। আপনার মোবাইল ফোনটা আপনার জন্য কেনা, অন্যের জন্য নয়। মাঝে মাঝে বেছে বেছে কল রিসিভ করুন। আমাদের বেশিরভাগ কলই গুরুত্বপূর্ণ হয় না, আর সময়ও নষ্ট করে। যে কলটি আপনার মন কিংবা মেজাজ খারাপ করে দেবে বলে আপনি আগে থেকেই জানেন কিংবা বুঝতে পারেন, অপরিহার্য না হলে সেটি রিসিভ করবেন না।
*চব্বিশ। আপনি সম্মান করেন কিংবা পছন্দ করেন, এমন কোন ব্যক্তির ১০টি ভাল গুণ কাগজে লিখে ফেলুন। এরপর আপনি বিশ্বাস করুন যে, সে গুণগুলি আপনার মধ্যেও আছে এবং যতই কষ্ট হোক না কেন, সে গুণগুলির চর্চা করতে থাকুন। উনি যেরকম, সেরকম হওয়ার অভিনয় করুন। উনি যেভাবে করে কাজ করেন, একই স্টাইলে কাজ করুন। এ কাজটি ২ সপ্তাহ করে দেখুন, নিজের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
*পঁচিশ। মাঝে মাঝে সফট মেলোডির ওরিয়েন্টালকিং বা ওয়েস্টার্ন ইন্সট্রুমেন্টাল শুনুন; হেডফোনে কিংবা একা রুমে বসে। কিছু ভাল মুভি দেখুন। কিছু মাস্টারপিস পেইন্টিং দেখুন। এবং একটা কাগজে একটা ভাল মিউজিক শুনে কিংবা মুভি আর পেইন্টিং দেখে আপনার কী অনুভূতি হল, লিখে ফেলুন। এটা ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।
*ছাব্বিশ। অন্যরা করার আগেই নিজেই নিজের বাজে দিকগুলি নিয়ে মাঝে মাঝে প্রকাশ্যে ঠাট্টা করুন। এতে করে আপনার নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে।
*সাতাশ। প্রতিদিনই এমন দুটি কাজ করুন, যেগুলি আপনি করতে পছন্দ করেন না। করার সময় বিরক্ত লাগলেও থেমে যাবেন না। যেমন, এমন একটি বই পড়তে শুরু করুন, যেটি আপনার পড়া উচিত কিন্তু পড়তে ইচ্ছা করে না। কিংবা এমন একজনকে ফোন করুন যাকে ফোন করা দরকার কিন্তু করা হয়ে ওঠে না। কিংবা বাসার কমোডটি পরিষ্কার করে ফেলুন। এতে করে আপনার দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা বাড়বে। যে কাজটি করতে গিয়ে অন্যরা ৩০ সেকেন্ডেই বিরক্ত হয়ে ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করে, সেটি যদি আপনি অন্তত ২২ মিনিট ঝিম ধরে পারেন, তবে আপনি অন্যদের চাইতে নিশ্চিতভাবে এগিয়ে থাকবেন।
*আটাশ। আপনি যেমন হতে চান, তেমন লোকের সাথে বেশি বেশি মিশুন। খেতে পছন্দ করে, এমন লোকের সাথে মিশে আপনি ওজন কমাতে পারবেন না।
*উনত্রিশ। দিনে একবার টানা ৩০ মিনিটের জন্য মৌন থাকুন। ওইসময়ে কারোর সাথেই কোন কথা বলবেন না। খুব ভাল হয় যদি চোখ বন্ধ করে পুরোনো কোন সাফল্যের কিংবা সুখের কোন স্মৃতির রোমন্থন করতে পারেন। এটা মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
*ত্রিশ। প্রায়ই ভাবুন, আপনি এই মুহূর্তেই মারা গেলে আপনার পরিবারের বাইরে আর কে কে আপনার জন্য কাঁদবে। ওরকম লোকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কী কী করা যায়, ভাবুন এবং করুন।
*একত্রিশ। আপনার হাতে মাত্র দুটো অপশন : হয় রাতে দেরিতে ঘুমাতে যান, অথবা সকালে ভোর হওয়ার আগে উঠুন। যদি রাতে সত্যিই একা থাকতে না পারেন, তবে সেকেন্ড অপশনটাই বেটার, কারণ বেশিরভাগ লোকই রাতে জাগে আর গল্প করে সময় নষ্ট করে। ভোরের আগে উঠতে পারলে, আপনাকে বিরক্ত করার কেউ থাকবে না, তাই আপনি পড়াশোনা করা ছাড়া আর তেমন কোন কাজই পাবেন না।
*বত্রিশ। আমরা যা-ই করি না কেন, সেটা যদি খুব উল্লেখযোগ্য কিছু হয়, তবে সেটা নিশ্চয়ই অন্তত ১০ বছরের ১০ হাজার ঘণ্টার পরিশ্রমের ফলাফল। পৃথিবীতে কেউই রাতারাতি কিছু করতে পারে না।
*তেত্রিশ। কোন একটা কাজ করতে হুট করেই পরিশ্রম করা শুরু করে দেবেন না। আগে বুঝে নিন, আপনাকে কী করতে হবে, কী করতে হবে না। এরপর পরিশ্রম নয়, সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করুন।
*চৌত্রিশ। পৃথিবীতে কেউই জিরো থেকে হিরো হয় না। আপনাকে ঠিক করতে হবে, আপনি কোন ব্যাপারটাতে হিরো হতে চাচ্ছেন। আপনি যে বিষয়টাতে আগ্রহ বোধ করেন না, কিংবা যেটাতে আপনি গুরুত্ব দেন না, সেটাতে সময় দেয়া মানে, স্রেফ সময় নষ্ট করা। আপনি যেটাতে সময় দিচ্ছেন, সেটাই একদিন আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে চেনাবে।
*পঁয়ত্রিশ। বুদ্ধিমত্তা আর অর্জনের মধ্যে সম্পর্ক খুব ভাল নয়। যার যত বেশি বুদ্ধি, সে তত বেশি এগিয়ে, এরকমটা সবসময় নাও হতে পারে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচাইতে ভাল রেজাল্ট-করা স্টুডেন্টদের শতকরা মাত্র ২০ ভাগ গ্রেটদের তালিকায় নাম লেখাতে পারে। বাকি ৮০ ভাগ আসে তাদের মধ্য থেকে যাদেরকে নিয়ে কেউ কোনদিন স্বপ্ন দেখেনি। তাই শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও নিজের সাথে লড়াই করে যান।
হ্যাপি লিভিং!!
©. Sushanta Paul. ( OCTOBER 29, 2015)
★★. " ভাবনা সপ্তবিংশ ( 27th Idea) :
---------------------------------------------------------------
(আমার কিছু ব্যক্তিগত ভাবনা আমার ভাবনা দেয়ালে শেয়ার করলাম। কারোর ভাল না লাগলে, এড়িয়ে যান।)
*এক। অতীতের যে যে কাজ করার কারণে আপনার জীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে, সেসব কাজের একটা তালিকা করে আপনার বালিশের কাছে রেখে দিন আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার করে পড়ে নিন কিংবা সেসব নিয়ে ৫ মিনিট ভাবুন। সেসব থেকে কীভাবে করে দূরে থাকা যায়, প্লান করুন। পরেরবার যখন একই কাজটি করতে যাবেন, তখন অবচেতন মনেই আগেরবারের ব্যর্থতার কথাটা স্মৃতিতে চলে আসবে। যদি সেটা থেকে কীভাবে নিজেকে দূরে রাখা যায়, সে প্ল্যানটা করা না থাকে, তবে আগের ব্যর্থতার স্মৃতি পরেরবারের কাজের মানকে প্রভাবিত করতে পারে।
*দুই। আপনাকে আগামী ১০ দিনে কী কী করতে হবে, সেটা নিয়ে না ভেবে আজকের দিনে কী কী করতে হবে, সেটা নিয়ে ভাবুন এবং কাজগুলি করতে শুরু করে দিন। এতে কাজকে সহজ মনে হবে।
*তিন। আপনার বিপরীত লিঙ্গের কাউকে, যাকে হয়তোবা কখনওই পাবেন না, তাকে সপ্তাহে একটি প্রেমপত্র লিখুন; একেক সপ্তাহে একেকজনকে। সেখানে তার বিভিন্ন গুণের কথা লিখুন। ফেসবুকে শেয়ার করতে পারেন চাইলে। এটা নির্মল মানসিক আনন্দদান করে। (এই যেমন, আমি সপ্তপদী’র সুচিত্রা সেনকে নিয়ে প্রায়ই বাইকে চেপে ঘুরতে যাই….......চারুলতা’র মাধবী মুখার্জির সাথে চোখের ভাষায় দুষ্টুমি করতে থাকি.........কিংবা, অড্রে হেপবার্নের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবি, এই বুঝি রোমান হলিডে’র সেই মিলিয়ন ডলার লুকটা দিল বলে.....!!)
*চার। আপনার মৃত্যুর পর আপনার কবরের গায়ে কী লেখা থাকবে বলে আপনি চান? সেটা কল্পনায় আনুন এবং সেটা করার চেষ্টা করতে থাকুন। আমারটা বলছি : এখানে যে মানুষটি শুয়ে আছে, সে মৃত্যুর আগে বেঁচে ছিল।
*পাঁচ। যে কাজটি করা আপনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে কিন্তু করতে ভাল লাগে না, সেটি অর্ধেক সময়ের মধ্যে করে ফেলার টেকনিক আবিষ্কার করুন। তাহলে আপনি যা যা করতে ভালবাসেন, সেগুলি করার জন্য সময় পাবেন।
*ছয়। আপনার সম্পর্কে ১৫টি নেতিবাচক পয়েন্ট লিখে ফেলুন। সেগুলির কোনটা থেকে আপনি কতদিনে মুক্তি পেতে চান, সেটা পয়েন্টের পাশে লিখে রাখুন। মাঝে মাঝে সে কাগজটা উল্টে দেখুন, যে যে পয়েন্ট থেকে মুক্তি পেয়েছেন, সেটি সেটি কেটে দিন। আপনার করতে ভাল লাগে, এমনকিছু করে আপনার ছোট ছোট সাফল্যকে সেলিব্রেট করুন।
*সাত। আপনি যে যে কাজ করতে ভয় পান, কিন্তু করা উচিত, সেসব কাজের একটি তালিকা বানান। তালিকাটি বড় করেই বানান। যত বিরক্তই লাগুক, প্রতিদিন একটি করে কাজ করতে শুরু করুন এবং এভাবে করে কয়েক সপ্তাহে কতটুকু এগিয়ে গেলেন, মিলিয়ে দেখুন।
*আট। আমরা আসলে কী করতে ভালোবাসি, সেটা জানাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেটা একবার জানতে পারলে, আর সেটাতে নিজের আন্তরিকতা আর প্রচণ্ড পরিশ্রম দিতে জানলে পিছিয়ে থাকার কোন কারণ নেই। আমাদের সবচাইতে বড় সমস্যা, আমাদের আসলে কী ভাল লাগে, আমরা সেটাই জানি না।
*নয়। কোন একটা বিষয়ে কাজ করা শুরু করার আগে যথেষ্ট সময় নিয়ে ভাবুন কাজটা কীভাবে করবেন, কতটুকু করবেন, কেন করবেন। ধৈর্য সহকারে চিন্তা করার ক্ষমতা দিয়ে মানুষ অনেকদূর যেতে পারে। নিজের ইন্টিউশনকে গুরুত্ব দিন।
*দশ। কোনকিছুকেই অন্ধভাবে ফলো করবেন না। কারোর বাঁধা ছকে না পড়ে নিজের ছক নিজেই বানান। যেকোনো পরামর্শকে নিজের সুবিধা মতো কাস্টমাইজড করে নিন।
*এগার। খুব রেগে গেলে মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকিয়ে উল্টো থেকে ১০০ থেকে ১ পর্যন্ত গুনতে থাকুন, কিংবা দেয়ালের অথবা সিলিংয়ের কোনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আপনার নিজের সম্পর্কে ১০টি ভাল চিন্তা করুন। এতে রাগ কমে যাবে।
*বার। গ্রেটম্যানদের নিন্দা করবেন না, নিন্দা শুনবেন না। ওরকম করলে অহংকার বাড়ে। আপনি যার সমপর্যায়ের নন, তার সম্পর্কে খারাপ বলার কোন যোগ্যতাই আপনার নেই, এটা মন থেকে বিশ্বাস করুন।
*তের। জীবনের সকল ক্ষেত্রে অতিপণ্ডিত এবং অতিবুদ্ধিমানদের এড়িয়ে চলবেন। এরা সাধারণত হয় আপনার ক্ষতি করবে নিজের লাভের জন্য, কিংবা আপনার আত্মবিশ্বাসকে ভেঙে দেবে।
*চৌদ্দ। টিভি দেখার সময় বাঁচিয়ে প্রার্থনা করুন, বই পড়ুন, মিউজিক শুনুন, কিংবা ভাল একটা মুভি দেখুন।
*পনের। নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে কাইজেন পদ্ধতি কাজে লাগান। কাইজেন মানে হল, না থেমে একটু একটু করে আরও ভাল অবস্থায় যাওয়া। অল্প অল্প করে ধীরে ধীরে এগিয়ে যান, কিন্তু থেমে যাবেন না।
*ষোল। প্রতিদিন ২ মিনিট করে ঘড়ির কাঁটার দিকে অখণ্ড মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে থাকুন। এসময় অন্যকোন ভাবনা মনে আসতে দেবেন না। এভাবে করে টানা ২১ দিন করুন। এতে আপনার চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়বে।
*সতের। প্রতিদিন আপনি আগের দিনের চাইতে কোন কোন ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলেন, একটা নোটবুকে তারিখ দিয়ে লিখে ফেলুন। আগের দিনের অসমাপ্ত কাজগুলি করার জন্য আজকের দিনের কাজ কমাবেন না, কাজ করার সময় বাড়িয়ে দিন।
*আঠার। প্রতিদিন নিজের পছন্দের একটি গান গলা ছেড়ে গাইতে পারেন, কিংবা নিজের পছন্দের একটি কবিতা আবৃত্তি করতে পারেন। যে যা-ই বলুক, আপনার নিজের ইচ্ছেটাকে সেলিব্রেট করুন। আপনি গান গাইবেন আপনার নিজের জন্য। যেটি আপনাকে আনন্দ দেয়, সেটি যদি কারোর কোন ক্ষতি না করে করতে পারেন, তবে সেটিকে নিয়ে কাউকে কোন বাজে কথা বলতে দেবেন না, কিংবা কারোর কোন বাজে মন্তব্যকে কেয়ার করবেন না।
*উনিশ। বেশিরভাগ সময়ই ক্লান্তি একটি কল্পনা। আপনি যে বিষয়টা করতে ওই মুহূর্তে পছন্দ করছেন না, সে বিষয়ে আপনার মস্তিষ্ক বারবার সিগন্যাল পাঠায়, আপনি ক্লান্ত! আপনি ক্লান্ত! পড়ার সময় ক্লান্তি এলে পড়তে ইচ্ছে করে না, কিন্তু সে সময়ে কোন বন্ধুর সাথে ঘুরতে যেতে বললে কিন্তু ক্লান্তি কাজ করে না। কোন বিরক্তিকর কাজে ক্লান্তি এলে ওইসময়ে কোন সুখকর কাজ দ্বিগুণ পরিমাণে করে সময়টাকে ঠিকভাবে কাজ লাগান।
*বিশ। মনোযোগ বাড়ানোর একটা টেকনিক ফলো করতে পারেন। আপনার রুমের এমন কিছু ছোটখাটো জিনিস দেখতে থাকুন, যা আপনি আগে কখনওই খেয়াল করেননি। সেগুলি নিয়ে ভাবতে থাকুন। সেগুলি থেকে কী কী জিনিস এই মুহূর্তেই রুম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়, ভাবুন এবং রেখেই দিন দূরে! যা আপনার দরকার নেই, তা থেকে মুক্ত হোন। প্রায়ই এমন হয়, একটা অপ্রয়োজনীয় জিনিস হাজারটা প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে আমাদের মনোযোগ সরিয়ে নেয়।
*একুশ। যাকে আপনি কোন একটা কাজে সহযোগিতা করতে পারবেন না, তাকে কখনওই বলবেন না যে সে কাজটি করতে পারবে না। যে আপনাকে কোন একটা কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না, তাকে কখনওই বলার সুযোগ দেবেন না যে আপনি কাজটা করতে পারবেন না।
*বাইশ। যারা ভাবেন, আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের, আমি কী-ই বা করতে পারব, তারা আসলে নিজেকে ফাঁকি দেয়ার রাস্তা তৈরি করে দিতে থাকেন। এরকম চিন্তা থেকে নিজেকে ক্ষমা করে দেয়ার প্রবণতা তৈরি হয় এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ না করার মানসিকতা গড়ে ওঠে। এ ধারণার প্রতিদিনের চর্চার মাধ্যমে আপনি নিজেকে দুর্বল করে দিতে থাকেন, কাজের মান এবং কাজের প্রতি উৎসাহ কমতে থাকে। যাদের
সাথে মিশলে আপনার ওই ধারণা আর চিন্তাভাবনা বেশি করে জাগে, তাদের সাথে কম কম মিশুন। আপনি জীবনে যেটা করতে চাইছেন, সেটা যদি আপনাকে করতে চেষ্টা করার সুযোগ দেয়া হয়, আপনি নিশ্চয়ই সেটার যোগ্য। নাহলে তো সেটা আপনাকে করার সুযোগই দেয়া হত না।
*তেইশ। যে কাজটি আপনার করা খুব দরকার, সেটি প্রতিদিন অন্তত ৪ ঘণ্টা করে টানা ২১ দিন করুন; কাজটা করতে ভাল লাগুক কিংবা না লাগুক।
*চব্বিশ। যে কাজটি আপনি জানেন, আপনাকে করা বন্ধ করে দিতে হবে, সে কাজটি করতে থাকবেন না। আপনি সে সময়ে অন্যকিছুতে মন দিন।
*পঁচিশ। যখন যা খেতে ইচ্ছে করবে, খেয়ে ফেলবেন। আপনার সবচাইতে সুন্দর পোশাকটিকে কোন বিশেষ দিনে পরার জন্য ফেলে রাখবেন না, আজকেই সেই বিশেষ দিন। কোথাও ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করলে, সুযোগ হলেই চলে যাবেন। অতিরিক্ত পয়সা জমিয়ে রাখবেন না। যে দিনটির জন্য অতো পয়সা জমিয়ে রাখছেন, সে দিনটি আপনার জীবনে নাও আসতে পারে। নাচতে ইচ্ছে করলে একটুখানি নেচে নেবেন। এটাই জীবন!
*ছাব্বিশ। যদি রান্না ভাল হয়, তবে যিনি রেঁধেছেন, তাকে ডেকে তার রান্নার প্রশংসা করুন। যারা আপনার চাইতে পদমর্যাদায় কিংবা অবস্থানে ছোট, তাদের সাথে হাসিমুখে কথা বলার প্র্যাকটিস করুন। যারা আপনার সেবা করছেন, তাদেরকে মাঝেমধ্যেই অকৃপণভাবে ধন্যবাদ দিন। আপনার কাছের মানুষটিকে, যাকে ভালবাসেন, তাকে তার মৃত্যুর আগেই একগুচ্ছ গ্ল্যাডিওলা দিয়ে বলুন, ভালোবাসি! নাহলে সে ফুল তার মৃত্যুর পর কবরের এককোনায় রেখে আসতে হবে। কী লাভ? মৃত মানুষ তো আর ফুলের সুন্দর গন্ধ নিতে পারে না! মৃত হয়ে যাওয়ার বড্ড অসুবিধে এই যে, মৃতরা পৃথিবীর সব সৌন্দর্য থেকেই বঞ্চিত।
*সাতাশ। সুযোগ পেলেই শিশুদের সাথে একেবারে ওদের মতো করে মিশুন, খেলুন, গল্প করুন। ওদেরকে বিভিন্ন গিফট দিন। ওদের প্রিয় মানুষ হয়ে উঠুন। এটা আপনাকে আশ্চর্য রকমের নির্মল আনন্দ দেবে।
বাঁচুন, বাঁচতে দিন!!
©. Sushanta Paul . ( NOVEMBER 4, 2015 )
★. Source : Sushanta Paul's FB notes . (30th BCS)
Assistant Commissioner of Customs @
Government of the People's Republic of Bangladesh.
Satkhira, Khulna, Bangladesh.
Customs, Excise & VAT Commissionerate, Khulna.
©. Collected By : Mr. Nobody । 21.06.2016 ।
﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla,/English Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]
﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]
*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷
*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 25.06.2018 || 🇧🇩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন