রোজা আল্লাহর জন্য। কোনো মানুষের জন্য নয়, আত্মীয়-স্বজনের জন্য নয়। বান্দা যখন রোজা রাখেন— একজনকেই খুশি করা তার উদ্দেশ্য থাকে। সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখার একটাই উদ্দেশ্য, একটাই লক্ষ্য, কাঙ্ক্ষিত সেই মহান প্রভুর ভালোবাসা অর্জন।
আল্লাহ তা’আলা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একটি হাদীসে কুদসীতে বলেন, (কুদসী বলা হয় যে হাদীস রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর ভাষায় বলেন ) আমি বলছি, আসসাওমু লি- রোজা আমার জন্য। নামাজ আমার এ কথা বলেননি, নামাজটা হলো বান্দার। আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ কাকে সিজদা করবেন? আল্লাহ কাকে রুকু করবেন? নাউযুবিল্লাহ! আল্লাহ দেনেওয়ালা, এক বছর টাকা জমা রেখে তারপরে যাকাত দেয়া লাগে নাকি আল্লাহর? কখনোই না।
আল্লাহ তা’আলা সব ইবাদতের তুলনায় বলছেন, আসসাওমু লি— রোজা হলো আমার, এ কাজটা আমার। আল্লাহর খাদ্যের প্রয়োজন নেই, আল্লাহর পানীয়ের কোনো প্রয়োজন নেই, আল্লাহ কোনো জিনিসের মুখাপেক্ষী নন। বান্দা তার গুণের মধ্যে আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় রোজার মধ্যে। রোজার সময়টা সে কোনোরূপ প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করার চিন্তা করে না। এমনকি হালাল বিবির দিকেও কেউ যদি কামনার দৃষ্টিতে রোজা রেখে তাকায় তাহলে এটাও মাকরূহ হবে তার। রোজাও কি হবে তার? মাকরূহ হবে। আল্লাহ তা’আলার ঘোষণা, ‘রোজা হলো আমার’। কত বড় মর্যাদা, আমার বলাটা, নিজের বলাটা। সুতরাং রোজার বদলা কী হবে? যে বান্দা আমার হতে চাইবে আমি নিজে তার হয়ে যাবো। ‘আনা আজযি বিহ’ আমিই তার বিনিময়। অর্থাত্ আল্লাহ তা’আলাই রোজার বিনিময় নিজ হাতে দেবেন। রোজাদার বান্দার প্রতি কতখানি ভালোবাসা আল্লাহর।
যেমন কুরআন ও হাদীসে আছে যে নামাজ পড়ে বেহেশত পাবা, তমুকটা করে হুর পাবা, তমুকটা করে বেহেশতের গাছ পাবা, তমুকটা করে বিল্ডিং পাবা, তমুকটা করে নহর পাবা, আর রোজার বেলায় বলেছেন কী? ‘আনা আজযি বিহ’ যদি রোজা রাখেন, রোজার হক আদায় করতে পারেন, তাহলে ‘আনা আজযি বিহ’ এই রোজার বিনিময়ে আমাকেই পেয়ে যাবেন। বান্দার তো আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসাই উদ্দেশ্য। এর চেয়ে বড় বান্দার পাওয়ার আর কী আছে? ‘রিদওয়ানুল্লাহি আকবার’ আল্লাহকে পাওয়া, আল্লাহর সন্তুষ্টিকে পাওয়ার নাম হলো আল্লাহকে পাওয়া। মালিক যখন সন্তুষ্ট হয়ে যান, মালিক যখন খুশি হয়ে যান তখন গোলামের আর কোনো চিন্তা থাকে না।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ হলো বান্দার সবচেয়ে বড় সফলতা। জীবন রাঙাতে এই সফলপথ মাড়াতে হবে প্রত্যেক মুমিনকে। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করে পরকালীন সফলতায় নিজেকে রাঙাতে পারবো। আল্লাহ তা’আলা আমাদের তাওফিক দিন। আমীন।
*. লেখক : আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ (০৩ জুন, ২০১৬ ইং)
শাইখুল হাদিস, মহাপরিচালক, জামিআ ইকরা বাংলাদেশ ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্রান্ড ইমাম। islahulbd@yahoo.com
★★. রমজান ও তারাবির নামাজ :
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো সালাত বা নামাজ এবংআরেকটি হলো সওম বা রোজা। তাই রোজার সঙ্গে নামাজের সম্পর্ক সুগভীর। প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন: ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছে, আর আমি তোমাদের জন্য তারাবির নামাজকে সুন্নত করেছি; অতএব যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানে দিনে রোজা পালন করবে ও রাতে তারাবির নামাজ আদায় করবে, সে গুনাহ থেকে এমন পবিত্র হবে যেমন নবজাতক
মাতৃগর্ভ থেকে (নিষ্পাপ অবস্থায়) ভূমিষ্ঠ হয়। (নাসায়ি শরিফ, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৩৯)।
*. তারাবির নামাজের ফজিলত:
রমজান মাসের সওগাত লাভের জন্য বিশেষ ইবাদত হলো তারাবির নামাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে রাত জেগে তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি শরিফ, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩০, হাদিস: ৩৬; ই. ফা.)।
*. তারাবি শব্দের অর্থ:
তারাবি শব্দটি বহুবচন, এর একবচন হলো তারাবিবাহ; যারআভিধানিক অর্থ হলো বিশ্রাম ও প্রশান্তি। ‘রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নত নামাজ কায়েম করা হয়, তা হলো তারাবির নামাজ।’ (কামুসুল ফিকাহ)। যেহেতু প্রতি চার রাকাত পরপর বিরতির মাধ্যমে বিশ্রাম নেওয়া হয়, তাই এ নামাজের এ নামকরণ করা হয়েছে।
*. তারাবির নামাজের বিধান:
তারাবির নামাজ ২০ রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদাহ। পুরুষদের জামাতে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত সুন্নত। এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত।
*.তারাবির নামাজ সম্পর্কিত কতিপয় হাদিস:
ইবনে রুমান (রা.) বলেন, হজরত উমর (রা.)-এর খিলাফতের সময় মানুষ ২৩ রাকাত (বিতিরসহ তারাবির নামাজ) পড়ত। (মুআত্তা মালিক, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১১০, হাদিস: ২৮১; আবু দাউদ, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৬৯৯, হাদিস: ৪২৮৯)।
হাসান (রা.) বলেন, ‘হজরত উমর (রা.) মানুষকে একত্র করলেন হজরত উবাই ইবনে কাআব (রা.)-এর পেছনে; তখন তিনি তাদের ইমামতি করে ২০ রাকাত নামাজ পড়তেন।’ (আবু দাউদ, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ৬৫, হাদিস: ১৪২৯)।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়তেন এবং বিতির। (মাকতাবাতু ইবনে তাইমিয়া, খণ্ড: ১১, পৃষ্ঠা: ৩৯৩, হাদিস: ১৬১০৬)।
আবুজার গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে তারাবির নামাজ পড়ল ইমাম প্রস্থান করা পর্যন্ত; তার কিয়ামে লাইল (রাত জাগার সওয়াব পূর্ণরূপে) লিখিত হবে। (তিরমিজি, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ১৬১-১৬৯, হাদিস: ৮০৬)।
মোল্লা আলী কারি (রা.) বলেন, তারাবির নামাজ ২০ রাকাত, এ বিষয়ে সব সাহাবি ইজমা (ঐকমত্য) হয়েছেন। (মিরকাত শারহে মিশকাত, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ১৯৪)।
শাঈখ উসাইমিন (রা.) বলেছেন: ‘সুন্নত হলো যে, ইমামের অনুসরণ করবে; কারণ যখন ইমাম (তারাবির নামাজ) সম্পূর্ণ করার পূর্বে (মুক্তাদি)) চলে যায়, তখন সে কিয়ামে লাইল (রাত জাগরণ)-এর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়।’ তিনি আরও বলেন: ‘আমরা দেখছি কিছু লোক ইমামের (২০ রাকাত শেষ হওয়ার) আগেই চলে যায়; শরিয়তের বিধান মতে ইমামের অনুকরণই বড় ওয়াজিব, এর বিপরীত করা মন্দ
কাজ। (মাজমুউল ফাতাওয়া, খণ্ড: ১৪, পৃষ্ঠা: ২০০-২০১)।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (র.) বলেন: ‘তবে তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে নিশ্চয় উবাই ইবনে কাআব (রা.) রমজানে রাত জেগে ২০ রাকাতে (তারাবির নামাজে) মানুষের ইমামতি করতেন এবং তিন রাকাত বিতির নামাজ পড়তেন।
তাই বহু উলামায়ে কিরাম মনে করেন, এটাই সুন্নত; কেননা তা আনসার ও মুহাজির সব সাহাবির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত, আর কেউ তা অস্বীকার করেননি। অন্য ইমামেরা ৩৯ রাকাত (বিতিরসহ) তারাবির নামাজ পড়া পছন্দ করেন; কারণ তা হলো মদিনার আমল।
তিনি আরও বলেন: সুতরাং ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়াই উত্তম, আর এটাই অধিকাংশ মুসলমানের আমল; আর নিশ্চয় এটি ১০ (সর্বনিম্ন) ও ৪০ (সর্বোচ্চ)-এর মাঝামাঝি। তবে যদি কেউ ৪০ রাকাত বা অন্য কোনো সংখ্যা আদায় করেন, তবে তাও জায়েজ হবে; এ বিষয়ে অন্য ইমামরাও আলোকপাত করেছেন। (মজমুআহ ফাতাওয়া, খণ্ড: ২২, পৃষ্ঠা: ২৭২; খণ্ড: ২৩, পৃষ্ঠা:১১২)।
*. লেখক : মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম।
smusmangonee@gmail.com (০৮/০৬/১৬ইং)
★. Source : দৈনিক ইত্তেফাক ও প্রথম আলো।
News Link : 1. http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/dormo-chinta/2016/06/03/123204.html
2. http://m.prothom-alo.com/opinion/article/881446/রমজান-ও-তারাবির-নামাজ
﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
** Note: ® [This is one of my Favorite Islamic Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]
﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]
*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷
*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 25.06.2018 || 🇧🇩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন