রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯

রিক্সাচালকদের নিয়ে উন্মাদীয় ফিচার !

**রিক্সাচালকদের নিয়ে উন্মাদীয় ফিচার !!!

রিক্সাচালক দেখেননি, এমন মানুষ এদেশে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেহেতু রিক্সাচালক ভাইয়েরা আমার আপনার মতই সাধারণ মানুষ; তাই তাদের চরিত্রেও বিচিত্রতা দেখা যায়। তারা কেউ রাগী-কেউবা আবেগী; কখনও শক্ত-কখনও ভক্ত; কোথাও খেয়ালি-কোথাও হেঁয়ালি! রিক্সাচালকদের এমন সব দিক নিয়ে উন্মাদের এবারের আয়োজন।

১. গল্পবাজ রিক্সাচালক:

এই শ্রেণীর রিক্সাচালক যাত্রী রিক্সায় বসামাত্রই শুরু করে দেন পারিবারিক সুখ-দু:খের কাহিনী। একে ‘খেজুরে আলাপ’ বললেও ভুল হবে; বলা যেতে পারে একেবারে ‘কাঁঠালে আলাপ’! তার বাড়ি কোথায়, পরিবারের কেউ অসুস্থ কিনা-জানতে না চাইলেও এসব তথ্য তিনি অকাতরে বিনিময় করেন। মাঝে মাঝে প্রসঙ্গ টেনে নেন একান্ত পারিবারিক বিষয়ে; যেন যাত্রী তার দু:সম্পর্কের ভাই! নানা সমস্যায় জর্জরিত এই শ্রেণীর রিক্সাচালক যাত্রীর বাসায় পৌঁছে ভাড়া নেওয়ার পরে যখন একটি পুরনো লুঙ্গি চেয়ে বসেন বা দশ-বিশ টাকা সাহায্য চান, তখন যাত্রীর পক্ষে ‘না’ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

২. ডেঞ্জারাস রিক্সাচালক:

এমন চালক থাকলে কোন পূর্বাভাস ছাড়াই রিক্সা হঠাৎ থেমে যায়। রিক্সার চেইন পড়ে যাওয়ার কথা বলে অথবা ছোট্ট প্রাকৃতিক কাজে সাড়া দেওয়ার অজুহাতে উধাও হয়ে যান রিক্সাচালক। মুহূর্তেই বাংলা সিনেমার স্টাইলে দু’পাশ থেকে হাজির হয় ছিনতাইকারী। তখন ‘ছেড়ে দে শয়তান’ বলে চিৎকার করলেও কোনো লাভ হয় না। যাত্রীর মোবাইল সেট, ঘড়ি, মানিব্যাগ সবই চলে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথিদের দখলে!

৩. জমিদার বংশীয় রিক্সাচালক:

এই ক্যাটাগরির রিক্সাচালকের ভাব ও কথার স্টাইলে মনে হয় উনি জমিদার ফ্যামিলির বংশধর। যাত্রীর দিকে তিনি এমনভাবে তাকান যেন যাত্রীর কোন পাপের কারণেই আজ তাকে রিক্সা নিয়ে পথে নামতে হয়েছে! যাত্রী কোথায় যাবেন-এটা তার কাছে কোন ইস্যুই না। এসব রিক্সাচালকদের পছন্দসই গন্তব্যে যেসব যাত্রী যেতে চান, তারা নিজেদের প্রথমে মহাভাগ্যবান মনে করলেও পরে যখন ভাড়া শোনেন, তখন সাময়িকভাবে তাদের হৃদযন্ত্রের ‘দম’ বন্ধ হওয়ার দশা হয়!

৪. ভাবের রিক্সাচালক:

আমরা প্রত্যেকেই ছাত্রজীবনে পড়ালেখাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো কিছু স্টুডেন্ট দেখেছি। তেমনি রিক্সাওয়ালাদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা রাজপথে-ফকিরপথে ‘ড্যামকেয়ার ভাব’ নিয়ে চলেন। যেন ট্রাকের সাথে বাড়ি লাগলে ট্রাকই উল্টে দশ মাইল দূরের খাদে গিয়ে পড়বে। তারা অত্যন্ত তৃপ্তি সহকারে যত্নের সাথে রিক্সা চালান। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে ট্রাক থামিয়ে তার সামনে দিয়ে হাই তুলতে তুলতে রিক্সা নিয়ে চলে যান। দৃশ্য দেখে মনে হয়, ট্রাকরূপী ‘টম’-কে রিক্সারূপী ‘জেরি’ বোকা বানাচ্ছে!

৫. জিম্মিকারী রিক্সাচালক:

ঝড়-বৃষ্টি আসবে এমন সব মুহূর্তে অসহায় যাত্রীদের নিয়ে এরা ‘টেবিল টেনিস’ খেলেন। বৃষ্টিতে ভিজে রিক্সা চালিয়ে তারা যে পথে যাচ্ছেন, সে পথেও কেউ যেতে চাইলে এমন ভাড়া চান যে যাত্রীর মাথায় বিনামেঘে বজ্রপাত পড়ে! আবার প্রতিদিন স্কুল বা অফিস টাইমে অথবা পাবলিক পরীক্ষার সময় যাত্রীরা খুব ভয়ে ভয়ে এদেরকে জিজ্ঞেস করেন, ‘যাইবা নাকি?’ ভয়ের কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশ্নের আগেই তাদের উত্তর চলে আসে, ‘যামু না’। আর গেলেও ভাড়া নিয়ে কোন কথা বলার সুযোগ থাকে না। এসব রিক্সাচালকদের সুপথে আনতে ‘যাত্রীদের জন্য হ্যাঁ বলুন’ শীর্ষক আইন করা উচিত।

৬. পাঙ্খা রিক্সাচালক:

এ প্রজাতির রিক্সার পাইলটরা গান গাইতে গাইতে প্লেনের গতিতে কোন গলিতে ঢুকে পড়েন, কখনওবা মনের সুখে ইউ টার্ন নেন। নায়কের মত রিক্সা চালানোর স্টাইল দেখে মনে হয় দূর থেকে তার প্রেমিকা এসব মনিটরিং করছে! পাঙ্খা রিক্সাচালকদের ভাবখানা এমন, সরকারের উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রিক্সা নিয়ে তারা এভারেস্টও জয় করে ফেলতে পারেন। রিক্সা নিয়ে আজ পর্যন্ত এভারেস্টের চূড়ায় কেউ উঠেছে বলে আমার জানা নেই। তবে এটা জানা আছে যে খামখেয়ালির কারণে এসব রিক্সাচালক মাঝে মাঝে মারাত্মক অ্যাকসিডেন্ট ঘটান- এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নীতিগত দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

৭. ইনসাফ প্রত্যাশী রিক্সাচালক:

যদি রিক্সাওয়ালা আপনাকে বলেন, ‘ইনসাফ কইরা ভাড়া দিয়েন’; তবে জানবেন আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছেন! যাত্রাশেষে যা ভাড়া তা-ই দিয়ে তাকে কখনোই সন্তুষ্ট করা সম্ভব হয় না। অগত্যা হয় যাত্রীকে আক্কেল সেলামি দিতে হয় অথবা শুরু হয় রিক্সাচালকের আসল চেহারার মোড়ক উন্মোচন! এদের সম্মানও এত বেশি যে যতই অসম্মান করা হোক গায়ে লাগে না। অগত্যা নিজের অসম্মানের ভয়ে যাত্রীকেই ক্ষান্ত দিতে হয়।

৮. গোল্ডবারওয়ালা রিক্সাচালক:

এমন রিক্সাচালকের পাল্লায় পড়ার খবর আমরা পেপারে পড়েছি। ঘটনার দৃশ্য এভাবে সাজানো: কোন এক শুভলগ্নে হঠাৎ থেমে যায় রিক্সা। রিক্সাচালক কুড়িয়ে পান দুবাইয়ের সোনার বিস্কুট, সাথে একটা চিঠি। রিক্সাচালক নিজে মূর্খ বলে চিঠিটা পড়তে দেন যাত্রীকে। চিঠিতে সোনার বিস্কুটের বিস্তারিত তথ্য জেনে যাত্রীর মাথা যায় আউলে! তিনি তখন রিক্সাওয়ালাকে কিছু দাম দিয়ে (নকল) গোল্ডের বিস্কুটটি কিনতে চান। সাজানো এই নাটকে লোভী যাত্রীর কাছ থেকে যতটুকু হাতানো যায়, তা-ই রিক্সাচালকের লাভ!

৯. অতি চালাক রিক্সাচালক:

এদের কথা শুনে যাত্রীর মাথা গরম হয়ে সাহারা মরুভূমির টেম্পারেচার ছাড়িয়ে যায়। যাওয়ার স্থানানুযায়ী ভাড়া ঠিকঠাক করে উঠার পরও গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই তারা বলেন যে আরো গেলে টাকা বাড়িয়ে দিতে হবে; এখানেই নাকি নামার কথা ছিল! আবার অন্যরকম ঘটনাও ঘটে। একবার মিরপুর স্টেডিয়ামে যেতে এক রিক্সাচালক চাইলেন ৩৫ টাকা। আমি ২৫ টাকার বেশি দিব না বলে যে-ই অন্য রিক্সার দিকে পা বাড়িয়েছি, তখন আগের রিক্সাচালক বললেন, ‘চলেন’। কিন্তু স্টেডিয়ামে এসে তিনি দিতে বললেন ৩৫ টাকা! তার যুক্তি হল যে তিনি ‘চলেন’ বলেছেন; ‘২৫ টাকায় চলেন’ তা তো বলেননি!

১০. আনাড়ি রিক্সাচালক:

দেশের জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ঢাকা শহরের রিক্সাচালক সংখ্যা। হঠাৎ ঢাকা শহরে রিক্সা চালাতে এসে এসব আনাড়ি চালকেরা নিজেরাও বিপদে পড়েন, যাত্রীদেরও বিপদে ফেলে দেন। দুই বাসের মাঝে রিক্সার মুখ না ঢুকিয়ে দিলে যে জ্যামের মধ্যে এগিয়ে যাওয়া যায় না-এ লজিক না বোঝা পর্যন্ত এরা থাকেন সাত নম্বর বিপদ সংকেতের মাঝে! বিশেষ করে চৌরাস্তায় এসে এরা রিক্সা তো পার করতে পারেনই না; বরং এদের ইতস্তত ভাবভঙ্গি যাত্রীর হাঁটুর কম্পন রিখটার স্কেলে সাত করে দেয়!

১১. উন্মাদ রিক্সাচালক:

এই কিছিমের রিক্সাচালকের কনফিগারেশনে কিছুটা টেকনিক্যাল সমস্যা আছে। তারা চোখে কম দেখেন এবং কানে কম শোনেন; আবার কথা বোঝেনও একটু কম। সোজা চলতে চলতে কোন কিছু না বললেও হঠাৎ ডানে-বায়ের গলিতে ঢুকে পড়েন। কখনওবা ডানে বললে বামে চলে যান। অনেক সময় সামনে থেকে গাড়ি আসতে দেখে ডানে সরবেন না বামে সরবেন-তারা সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই গাড়ির সাথে রিক্সার কোলাকুলি হওয়ার দশা হয়ে যায়!

**Source : উন্মাদ ।
*লেখা: আসিফ মেহ্দী
*আঁকা: আহসান হাবীব

﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla/English Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 10.03.2019 || 🇧🇩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা...

**প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা... ১) মন শুধু মম ছুঁয়েছে- সোলস ২)নিঃস্ব করেছ আমায় - শাফিন ৩)ফিরিয়ে দাও- মাইলস ৪)শ্রাবনের মেঘগু...