হে মানব, তুমি তোমার রবের কাছে সম্পদ নিয়ে আসতে পারবে না। তুমি তোমার পালনকর্তার দরবারে পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসতে পারবে না। শাস্তি থেকে নিরাপত্তা নিয়েও হাজির হতে পারবে না। তুমি শুধু তোমার রবের কাছে আমল নিয়ে আসতে পারবে। সেটা যদি ভালো হয়; তবে তুমি মুনকার ও নাকিরের প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারবে। চিরস্থায়ী সুখের সুসংবাদ পাবে। আর আমল যদি মন্দ হয়, তাহলে তোমার উত্তর খুঁজে পাবে না। যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির
দুঃসংবাদ পাবে
মহাবিশ্বের পালনকর্তা আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পর মানুষের সফলতা, বিজয় ও সুখ-শান্তি অর্জন হয় না।
আর আল্লাহ যা করতে নিষেধ করেছেন সেগুলো বর্জন করে তাঁর আদেশগুলো পালন করা ছাড়া আনুগত্য বাস্তবায়ন হয় না। যারা আল্লাহর আদেশগুলো পালন করে এবং নিষেধগুলো বর্জন করে তাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তারা নবী-রাসুল, সত্যবাদী, শহীদ ও সৎকর্মশীল লোকদের সঙ্গে থাকবে, যাদের ওপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। তারা সঙ্গী হিসেবে উত্তম। তা আল্লাহর পক্ষ থেকে দয়া। আল্লাহ জ্ঞানী হিসেবে যথেষ্ট।’ (সূরা নিসা : ৬৯-৭০)। আর যে ব্যক্তি আদিষ্ট বিধান মেনে চলে এবং পাপেও লিপ্ত হয় সে একদিকে আল্লাহর আনুগত্য করল এবং অন্যদিকে আল্লাহর অবাধ্যতা করল। নিজের রবের অবাধ্যতার ফলে ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার পুণ্য হ্রাস পায়। অবাধ্যতা যদি চরম বাতিল ও গর্হিত কিছু হয়; তবে সেটা ভালো কাজের পুণ্যকে বিনষ্ট করে দেয়। তাই যে আল্লাহর পরিপূর্ণ অনুগত হতে চায় তার উচিত আনুগত্যের করণীয় বিষয়গুলো পালন করা ও হারাম কাজগুলো বর্জন করার মাঝে সমন্বয় করা। যেমনটি আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের আনুগত্য কর। তোমরা তোমাদের আমলগুলোকে বিনষ্ট করো না।’ (সূরা মুহাম্মদ : ৩৩)। অর্থাৎ ইবাদতগুলোকে গোনাহ ও অবাধ্যতা দিয়ে ধ্বংস করো না। আল্লাহ আরও বলেছেন, ‘তোমরা সেই নারীর মতো হয়ো না, যে তার সুতা মজবুত করে পাকানোর পর তার পাক খুলে নষ্ট করে দেয়।’ (সূরা নাহল : ৯২)। এটা প্রত্যেক ইবাদতের ক্ষেত্রে বলা যায়, যার পরে কোনো গোনাহ করা হয়, যেটা তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সূরা বাকারার ২৬৬নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর সেই বাগানে অগ্নিঝড় আসায় তা পুড়ে গেল।’ মুফাসসিররা এ আয়াতের তাফসিরে বলেছেন, ‘আল্লাহ এ দৃষ্টান্ত দিয়েছেন ওই ইবাদতগুলোর জন্য, যেগুলোকে পাপ ও অন্যায় ধ্বংস করে দেয়, নষ্ট করে দেয়।’ আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।
সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আমি আমার উম্মতের এমন কিছু দল সম্পর্কে জানি, যারা কেয়ামতের দিন তিহামা পর্বতের মতো বিরাট বিরাট সুন্দর আমল নিয়ে উপস্থিত হবে। আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলো বানিয়ে দেবেন। সাওবান (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, তাদের বর্ণনা দিন, আমাদের জন্য তাদের স্পষ্ট করে দিন, যাতে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই। তিনি বললেন, তারা তোমাদেরই ভাই, তোমাদেরই বংশের, রাতে তোমরা যে পুণ্য গ্রহণ কর তারা তাই গ্রহণ করবে। কিন্তু তারা এমন দল যখন তারা নির্জনে আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয়ের মুখোমুখি হয়, তখন তা লঙ্ঘন করে।’ (ইবনে মাজাহ)। এ হাদিসে তাদের প্রতি ভীষণ হুমকি ও হুঁশিয়ারি রয়েছে আল্লাহর ভয় যাদের হারাম কাজ থেকে ফেরাতে পারে না, যারা ভালো কাজের পরে মন্দ কাজ করে।
বরকত ও কল্যাণের মাসে ইবাদত-বন্দেগির তৌফিক দিয়ে ও সাহায্য করে আল্লাহ আপনাদের প্রতি দয়া করেছেন। ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে রক্ষা করেছেন। হারাম কাজ ও ভ্রান্তির দিকে আহ্বানকারী শয়তানকে আপনাদের কাছ থেকে দূরে রেখেছেন। রমজানে আপনাদের জন্য সময়গুলো নির্মল ছিল। মুহূর্তগুলো ছিল পবিত্র ও সুন্দর।
কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে ও শ্রবণ করে আপনারা তৃপ্তি লাভ করেছেন। দয়াময় আল্লাহর আনুগত্যে আপনাদের হৃদয় পরিশুদ্ধ হয়েছে। শয়তানকে আপনারা কাবু করেছেন। সৎকাজে ছিলেন সহযোগী। আল্লাহর দুশমন ঘৃণিত শয়তান ছাড়া পেয়ে আপনাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চায়। আমলগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধুলোয় পরিণত করতে চায়। তাকওয়াকে পাপাচারে ও কল্যাণকর বিষয়কে অনিষ্টকর বিষয়ে রূপান্তর করতে চায়। যাকে সম্ভব তাকে ভ্রষ্ট করতে চায়; যেন সে তার সঙ্গে জাহান্নামে থাকে এবং তার পরিণতি নিকৃষ্ট হয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের শত্রু। তাই তোমরা তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ কর। সে তার দলকে জাহান্নামের বাসিন্দা হতে আহ্বান করে।’ (সূরা ফাতির : ৬)। শয়তানকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ করার অর্থ হলো ইবাদত-বন্দেগিতে অবিচল থাকা ও হারাম কাজ বর্জন করা। তাই যারা ভালো কাজের পর আরও ভালো কাজ করে তাদের জন্য শুভ সংবাদ। যারা মন্দের পরে উত্তম কাজ করে তাদের জন্য শান্তি। আল্লাহ বলেন, ‘দিনের দুই ভাগে ও রাতের একাংশে নামাজ কায়েম কর। নিশ্চয়ই ভালো কাজ মন্দ কাজকে দূর করে দেয়। তা জিকিরগুজার লোকদের জন্য উপদেশ।’ (সূরা হুদ : ১১৪)। মোমিন ব্যক্তি আমলকে সুন্দর করবে এবং সবসময় আল্লাহর কাছে সুন্দর সমাপ্তি কামনা করবে। শয়তান সুন্দর সমাপ্তির দ্বারাই পরাভূত হয়।
যে ব্যক্তি মন্দ কাজের পর আরও মন্দ করে, এক পর্যায়ে মৃত্যু চলে আসে, আর সে ডুবে থাকে প্রবৃত্তির অতলে, তার জন্য শাস্তি ও দুর্ভোগ। তারপরে সেখানে তার মাঝে ও দুনিয়ার মাঝে আড়াল চলে আসে। সে যেসব আমোদ-ফুর্তি উপভোগ করত, তা তার কোনো উপকারে আসবে না। তখন অনুশোচনা হবে। যন্ত্রণা ও শাস্তি স্থায়ী হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি কি লক্ষ করেছেন, আমি তাদের কয়েক বছর উপভোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম, তারপর তাদের কাছে তাদের প্রতিশ্রুত বিষয় চলে এসেছে। তারা যা উপভোগ করত, তা তাদের কাজে লাগেনি।’ (সূরা শুআরা : ২০৫-২০৭)। জীবন উভয় দলের পরিণতিরই সাক্ষী। যে উপদেশ গ্রহণ করে, সে সৌভাগ্যবান। আর সৎপথ থেকে বিমুখ থাকে এবং উপদেশ গ্রহণ করে না সে দুর্ভাগা।
হে মানব, তুমি তোমার রবের কাছে সম্পদ নিয়ে আসতে পারবে না। তুমি তোমার পালনকর্তার দরবারে পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসতে পারবে না। শাস্তি থেকে নিরাপত্তা নিয়েও হাজির হতে পারবে না। তুমি শুধু তোমার রবের কাছে আমল নিয়ে আসতে পারবে। সেটা যদি ভালো হয়; তবে তুমি মুনকার ও নাকিরের প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারবে। চিরস্থায়ী সুখের সুসংবাদ পাবে। আর আমল যদি মন্দ হয়, তাহলে তোমার উত্তর খুঁজে পাবে না। যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির দুঃসংবাদ পাবে।
আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তান তোমাদের আমার নৈকট্য এনে দিতে পারবে না; তবে যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ প্রতিদান, তাদের আমলের বিনিময়স্বরূপ। তারা বিভিন্ন প্রাসাদে নিরাপদ থাকবে।’ (সূরা সাবা : ৩৭)। তোমার বাণিজ্য হলো রাব্বুল আলামিনের আনুগত্য করা। তোমার সফলতা হলো আনুগত্য। তোমার শান্তি হলো আনুগত্য। তোমার গৌরব ও সম্মান হলো আনুগত্য। যখন সব বিষয়ের হিসাব সমবেত হবে, তখন ইবাদত ও আনুগত্যই হলো উপকারী ও সুপারিশকারী। আনুগত্যের প্রথম বিষয় হচ্ছে একনিষ্ঠতা বা আন্তরিকতা। তোমার উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি। কোনো লোক-দেখানো মনোভাব বা খ্যাতি নয়। দ্বিতীয় বিষয় হলো আনুগত্য হবে নবী মুহাম্মদ (সা.) এর দিকনির্দেশনা ও সুন্নত অনুযায়ী। তৃতীয় বিষয় হলো এ আনুগত্য ভ্রান্তিকর বিষয় থেকে মুক্ত থাকবে। চতুর্থ বিষয় হলো আনুগত্যে অবিচলতা। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার রবের ইবাদত কর ইয়াকিন তোমার কাছে আসা পর্যন্ত।’ (সূরা হিজর : ৯৯)।
মুফাসসিররা বলেন, ‘ইয়াকিন মানে এখানে মৃত্যু।’ কেননা তা নিশ্চিত।
যে ব্যক্তি বলে, বান্দা ঈমানের ক্ষেত্রে ইয়াকিনের স্তরে পৌঁছে গেলে তার থেকে দায়দায়িত্ব মওকুফ হয়ে যায়, সে ব্যক্তি আস্ত বিতাড়িত শয়তান, ভ্রান্ত, পথভ্রষ্টকারী। তার জন্য ইসলামের বিন্দু পরিমাণ অংশ নেই। তাদের কালেমার সাক্ষ্য বাতিল হয়ে যাবেÑ এমন কথা বললে। এরা শয়তানের দোসর। তারা রহমানের বন্ধু নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের ওপর থেকে কি আমলের দায়িত্ব মওকুফ হয়েছিল? রাসুল কি বাস্তবতা লুকিয়েছিলেন? আর এসব ভ- লোক তা জেনে গিয়েছে? তাই দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত তোমার রবের আনুগত্য ও ইবাদত করতে থাক। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছেন তার ওপর অবিচল থাকুন।’
Source: © শায়খ ড. আলী বিন আবদুর রহমান হুজায়ফি (৪ শাওয়াল ১৪৪০ হিজরি মসজিদে নববির জুমার খুতবার সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর করেছেন মাহমুদুল হাসান জুনাইদ)
*Collected.
﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
** Note: ® [This is one of my Favorite Islamic Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]
﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
*** N.B : [All the post on this blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Bohemian's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]
*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷
*** Posted by : © "Bohemian's Diary" (former, Dhumkeatu's Diary) || 17.06.2019 || 🇧🇩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন