মশা বর্তমান সময়ে একটি আলোচিত প্রসঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হঠাৎ করে এডিস মশার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছে, এমনকি বেশ কিছু মানুষের মৃত্যুও হয়েছে এ কারণে। সাধারণত মশার বাড়াবাড়ি আমরা শীতকালে লক্ষ্য করি। কিন্তু এ সময়ে কীভাবে এডিস মশার প্রকোপ বেড়ে গেল তা সংশ্লিষ্ট সবাইকে সত্যিই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। একটি ছোট্ট জীব কীভাবে মহা শক্তিশালী মানুষের মৃত্যুর কারণে পরিণত হতে পারে তা কি ভাবনার বিষয় নয়? এখানে কি আমাদের জন্যে কোন শিক্ষা আছে?
আল কোরআনে মশা সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ¦ বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। বস্তুত যারা মুমিন তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে যে, তাদের পালনকর্তা কর্তৃক উপস্থাপিত এ উপমা সম্পূর্ণ নির্ভুল ও সঠিক। আর যারা কাফের তারা বলে, এরূপ উপমা উপস্থাপনে আল্লাহর মতলবই বা কী ছিল? এ দ্বারা আল্লাহ তাআলা অনেককে বিপথগামী করেন, আবার অনেককে সঠিক পথও প্রদর্শন করেন। তিনি অনুরূপ উপমা দ্বারা অসৎ ব্যক্তিবর্গ ভিন্ন কাউকেও বিপথগামী করেন না।’ (সুরা আল-বাকারাহ, ২: ২৬)
এ আয়াতে সাতটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন: (১) মশা সৃষ্টির মধ্যেও মানুষের জন্যে আল্লাহর নিদর্শন রয়েছে, (২) মশার চেয়েও ক্ষুদ্র সৃষ্টি রয়েছে, (৩) বিশ্বাসীরাই কুরআনে বর্ণিত বিষয়সমূহে সত্য সঠিক হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করে, (৪) অবিশ্বাসীরা কোনো কিছুতেই আল্লাহর নিদর্শন বুঝতে পারে না, (৫) এরকম নিদর্শনও মানুষের জন্যে সঠিক পথের দিশা হতে পারে, (৬) আবার অনেককে বিপথগামী করতে পারে, (৭) অসৎ ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ কখনও সঠিক পথে নেন না।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লক্ষ্য করলেও আমরা আশ্চর্য হবো এটা জেনে যে, কুরআন যে তথ্য প্রায় চৌদ্দ শত বছর পূর্বে মানব জাতিকে দিয়েছিল তা আধুনিক বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত হওয়ায় শুধু কোরআনের বিশুদ্ধতা নয় বরং কোরআন যে একটি জীবন্ত মুজেজা তাও বিবেচিত হচ্ছে। এ আয়াতে তিনটি বৈজ্ঞানিক বিষয়কে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বলে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। যথা:
প্রথমত গঠনগত কারণে মশার সৃষ্টি অন্য যেকোনো প্রাণী থেকে অনন্য এমনকি অন্যান্য উড়ান্ত পতঙ্গ থেকেও অনেকগুলো কারণে ভিন্ন।
দ্বিতীয়ত কোরআনে ব্যবহৃত শব্দ ‘বাউদাহ’ মূলত স্ত্রীবাচক শব্দ। যা নারী মশাকে বোঝায়। এবং আধুনিক বিজ্ঞান ইতিমধ্যে এটি প্রমাণ করেছে যে, শুধুমাত্র স্ত্রী মশাই মানুষের রক্ত খায়। রক্ত খায় তারা তাদের ডিমে নিউট্রিশনের প্রয়োজন পূরণ করার জন্যে। এবং
তৃতীয়ত মশার চেয়েও ভিন্ন পতঙ্গ রয়েছে যারা তাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করে বা তাদের থেকে রক্ত খায়। অত্যন্ত আশ্চর্য যে, ১৯২২ সালে প্রথম বিজ্ঞানী এফ.ডব্লিউ এডওয়ার্ডস তার গবেষণাপত্রে দাবি করেন যে, দক্ষিণ এশিয়ার মালয় অঞ্চলে এমন এক ধরনের পতঙ্গ পাওয়া গেছে যা মশা থেকেই রক্ত খায়। এ প্রাণীটির নাম দিয়েছেন, কুলিকোইডস এনোফেলিস।
উল্লেখ্য, মশা সম্পর্কে আমাদের একিট ভুল ধারণা হলো, মশা বেঁচে থাকার জন্যে আমাদের রক্ত খায়। আসলে রক্ত মশার খাবার নয়। তারা বিভিন্ন ফল-মূল থেকে বেঁচে থাকার জন্যে জুস হিসেবে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। রক্ত শুধু নারী মশাদের ডিম পাড়া জন্যে প্রয়োজন হয় এবং এটি তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়াস মাত্র। কিন্তু এ রক্ত সংগ্রহ করার সময় তাদের দ্বারা বাহিত বিভিন্ন রকমের জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ফলে আমাদের বিভিন্ন রকম অসুখ হয়। অর্থাৎ স্ত্রী মশারাই আমাদের মশাবাহিত রোগের মূল কারণ।
মশার কথা আল্লাহ কেন কোরআনে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার কিছু অন্তর্নিহিত কারণ বুঝতে আধুনিক বিজ্ঞান আমাদেরকে সহায়তা করেছে। তথ্যগুলো সত্যিই সচেতন যে কাউকে ভাবনায় ফেলে দেবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো: (১) প্রায় ২৭০০ প্রজাতির মশা রয়েছে, (২) মশার একশরও বেশি চোখ রয়েছে, (৩) মশার মুখে ৪৮টি দাঁত রয়েছে, (৪) একটি মশার তিনটি পূর্ণ হার্ট (হৃদযন্ত্র) রয়েছে, (৫) মশার নাকে ছয়টি পৃথক ছুরি রয়েছে এবং প্রত্যেকটি ছুরির পৃথক ব্যবহার তারা করে থাকে, (৬) মশার শরীরে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন আছে যা দিয়ে রাতের আঁধারে মানুষের চামড়াকে শনাক্ত করে, (৭) প্রত্যেক মশার নিজস্বভাবে এনেস্থেশিয়া দেয়ার ভ্যাকসিন আছে যা রক্ত নেয়ার সময় ব্যবহার করে সেই জায়গাটাকে অবশ করে নেয় যাতে রক্ত নিলেও কোনো ব্যাথা না পাই আমরা, (৮) রক্ত পরীক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা এদের আছে। কারণ, এরা সব ধরনের রক্ত পছন্দ করে না, (৯) মশা উড়ার সময় সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ বার তাদের পাখা নাড়ায়, (১০) বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যুর জন্যে সব প্রাণীর মধ্যে মশাই বেশি দায়ী, (১১) ১৮ ফুট দূর থেকে তাদের টার্গেট ঠিক করতে পারে, (১২) পুরুষের চেয়ে নারী মশারা বেশিদিন বাঁচে এবং (১৩) মশার মতো আরো একটি ক্ষুদ্র পতঙ্গ আছে যা মশা থেকেই রক্ত সংগ্রহ করে।
যদিও আধুনিক বিজ্ঞান মশা সম্পর্কে অনেক তথ্যই আমাদেরকে দিয়েছে তবুও আমরা বলব আরও অনেক তথ্যই অজানা রয়ে গেছে। কারণ, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আধুনিক বিজ্ঞান হিমশিম খাচ্ছে। কার্যকরী উপায় বের হবার আগেই প্রাণ হারাতে হচ্ছে শক্তিমান এ মানব জাতির অনেককেই। তাই, ভবিষ্যৎ বিজ্ঞান হয়ত সেগুলোকেও আমাদেরকে জানিয়ে দেবে।
আচ্ছা এতকিছু জানার পরেও কি মনে হচ্ছে মশার মধ্যে কোনো নিদর্শন নেই? আমরা কি এখনো খুঁজে পাচ্ছি না মশার মাঝে আল্লাহর মহত্ত্ব, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা? যদি না পেয়ে থাকি তাহলে মশা নিয়ে কোরআনের আরও একটি গল্প মনে করিয়ে দিতে চাই। মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.) এর সময়ের রাজার নাম ছিল নমরুদ। সে নিজেকে এতটাই উচ্ছতায় ভাবত যে, সৃষ্টিকর্তা হিসেবেও দাবি করেছিল। জন্ম, মৃত্যু, খাদ্যের জোগান সবকিছু তার ক্ষমতার মধ্যে বলেও দাবি করেছিল। তার সাথে নবি ইবরাহিম (আ.) এর একটি কথপোকথন আল্লাহ তাআলা কোরআনে উল্লেখ করেছেন। (দেখুন: সূরা আল-বাকারাহ, ২: ২৫৮) এই নমরুদের সেনাবাহিনীকে শেষ করে দেয়া হয়েছিল অসংখ্য মশা দ্বারা। আর ছোট্ট এই মশা প্রবেশ করেছিল নমরুদের নাকের মধ্যে। শেষপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছিল সৃষ্টিকর্তা দাবি করা এই পাপিষ্ঠের একটি মশার কারণে।
কোরআনের এ গল্পটি আমাদেরকে স্মরণ করে দেয় মশার ক্ষমতা এবং এর ব্যবহারের উদ্দেশ্য। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে যেমন আমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য হতে পারে তেমনি আমাদের পাপের শাস্তিও হতে পারে। নমরুদের বেলায়ও তাই হয়েছিল।
একটু খেয়াল করলে দেখতে পাবো কী হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীতে? কী পরিস্থিতি পার করছি আমরা। জীবন সেখানে অনিরাপদ হয়েছে বিভিন্ন কারণে। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ সেখানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, পাপের প্রসারতা, মদ ও মাদকদ্রব্যের ব্যাপকতা, হারামকে হালাল মনে করার প্রবণতা, দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ বৃদ্ধি, ন্যায় বিচারের উপেক্ষা, ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি অনীহাসহ অন্যান্য কারণ কিন্ত বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে দায়ী হতেও পারে। আল্লাহই জানেন প্রকৃত রহস্য, উদ্দেশ্য। তদুপরি, হঠাৎ করে আমাদের দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি এবং ইতিমধ্যে কিছু প্রাণহানি কিন্তু আমাদেরকে অনেক কিছু জানিয়ে দেয়। অন্যান্য কার্যকরী পদক্ষেপের পাশাপাশি আল্লাহর রহমত ছাড়া এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের আশু কোনো পথ দেখছি না। আমাদের প্রত্যেকের উচিত সৃষ্টিকর্তা যার ক্ষমতা শুধু অসীম না বরং সকল কিছুতে তার কর্তৃত্ব সমসীন, চিরস্থায়ী তার কাছেই জীবনের সুস্থতা ও নিরাপত্তার জন্যে দোয়া করা প্রয়োজন। প্রিয়নবি মুহাম্মদ (সা.) একটি দোয়া আমাদেরকে শিখিয়েছেন। তারই ভাষায়, আউযুবি কালামাতিল্লাহি তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাকা (অর্থ: আল্লাহর পূর্ণ কালিমার বিনিময়ে তার সৃষ্টির সকল অনিষ্ট থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছি)” (দেখুন: সুনানু আবি দাউদ, হাদিস নম্বর ৩৮৯৮ এবং ৩৮৯৯)। আল্লাহ আমাদেরকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন!
*লেখক: ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ
পিএইচডি, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া
*Collected.
﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
** Note: ® [This is one of my Favorite Islamic Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]
﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
*** N.B : [All the post on this blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Bohemian's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]
*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷
*** Posted by : © "Bohemian's Diary" (former, Dhumkeatu's Diary) || 09.08.2019 || 🇧🇩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন