বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৯

জুমার দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমা ও জুমাবারের রাত-দিন অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়েছে। জুমার দিনের সওয়াব ও মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো। এ দিন ইসলামী ইতিহাসে বড় বড় ও মহৎ কিছু ঘটনা ঘটেছে। জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তা’আলার কাছে এতখানি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করা হয়েছে।

আল্লাহ তা’আলা কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচা-কেনা (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে।’ (সূরা জুমা : ০৯)।

জুম্মার দিনের ফজিলত!
-----------------------------------
১. সূর্য উদিত হয় এমন দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হলো সর্বোত্তম। হাদিসের ভাষ্য মতে, এদিনে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে।যথা-

(ক) এ দিনে আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়।
(খ) এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়।
(গ) একই দিনে তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হয়। (মুসলিমঃ৮৫৪)।
(ঘ) একই দিনে তাকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়।
(ঙ) এ দিনেই তার তওবা কবুল করা হয়।
(চ) এ দিনেই তার রূহ কবজ করা হয়। (আবু দাউদঃ১০৪৬)।
(ছ) এ দিনে শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে।
(জ) এ দিনেই কেয়ামত হবে।
(ঝ) এ দিনেই সবাই বেহুঁশ হয়ে যাবে। (আবু দাউদ : ১০৪৭)।
(ঞ) প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা,
আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত ও সমুদ্র এ দিনটিকে ভয় করে। (ইবনে মাজাহ ১০৮৪)।

২. উম্মতে মুহাম্মদির জন্য এটি একটি মহান দিন।
এ জুম্মার দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদি-নাসারাদের ওপর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল,
কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এ দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদিরা শনিবারকে আর খ্রিস্টানরা রোববারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল।
অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফজিলতের দিন হিসেবে দান করেছেন।
আর উম্মতে মুহাম্মদি তা গ্রহণ করে নিয়েছে। (বোখারিঃ৮৭৬)।

৩. জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহঃ১০৯৮)।
৪. জুমার দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দিন।
এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন। (ইবনে মাজাহঃ১০৮৪)।
৫. জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে,
যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায় তাই তাকে দেয়া হয়।
(এ সময়টি গোপন রাখা হয়েছে- তবে এক হাদীস অনুযায়ী) এ সময়টি হলো জুমার দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত। (মুসলিম : ৮৫২)।
৬. জুমার রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি মারা যায় আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের ফেতনা থেকে রক্ষা করবেন। (তিরমিজিঃ১০৭৮)
৭. জান্নাতে প্রতি জুমার দিনে জান্নাতিদের হাট বসবে। জান্নাতি লোকেরা সেখানে প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হবেন।
তখন সেখানে এমন মনোমুগ্ধকর হাওয়া বইবে,
যে হাওয়ায় জান্নাতিদের সৌন্দর্য অনেকগুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরাতা দেখে অভিভূত হবে।
অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে। (মুসলিমঃ২৮৩৩)
৮. যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ পড়বে,আল্লাহ তায়ালা তার জন্য দুই জুমারমধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেবেন। (জামেউস সাগিরঃ৬৪৭০)।
৯. যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে।
(মুসলিম)।
১০. প্রত্যেক সপ্তাহে জুমার দিন আল্লাহ তায়ালা বেহেশতি বান্দাদের দর্শন দেবেন।(সহিহুত তারগিব)।
১১. এই দিনে দান-খয়রাত করার সওয়াব অন্য দিনের চেয়ে বেশি হয়। ইবনুল কায়্যিম বলেছেন, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের দানের সওয়াব যেমন বেশি, তেমনি শুক্রবারের দান-খয়রাত অন্য দিনের তুলনায় বেশি। (জাদুল মায়াদ)।
১২. ইবনুল কায়্যিম আরও বলেছেন, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের মর্যাদা যেমন,সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমা বারের মর্যাদা ঠিক তেমন।
তাছাড়া রমজানের কদরের রাতে যেমনভাবে দোয়া কবুল হয়, ঠিক তেমনি শুক্রবারের সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণেও দোয়া কবুল হয়। (জাদুল মায়াদঃ১/৩৯৮)।
১৩. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহুথেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি জুমুয়ার দিন সূরা কাহফ পড়বে তার দুই জুমুয়ার মধ্যবর্তী সমগ্র সময় জুড়ে তার ওপর আল্লাহর জ্যোতি
বর্ষিত হতে থাকবে”। [নাসায়ী, বাইহাকী]
*
জুমআর নামাজের দুটি বিশেষ ফজিলত

১. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুমআর দিনে ফেরেশতাগণ বিশেষ রেজিস্টার নিয়ে মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে যান। তাঁরা মসজিদে আগমনকারী মুসল্লিদের নাম পর্যায়ক্রমে লিপিবদ্ধ করতে থাকেন। অতঃপর যখন ইমাম সাহেব এসে যান, তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবা শুনতে থাকেন।
যে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করে, সে একটি উট আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। যে দ্বিতীয়তে প্রবেশ করে, সে একটি গরু আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে ৩য় তে প্রবেশ করে, সে একটি দুম্বা আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়। যে চতুর্থতে প্রবেশ করে, সে একটি মুরগি আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব লাভ করে। আর যে পঞ্চমে প্রবেশ করে, সে একটি ডিম আল্লাহর রাস্তায় দান করার সওয়াব পায়।
(মুসনাদে শাফী : ৬২, জামে লি ইবনে ওহাব : ২২৯, মুসনাদে হুমাইদি : ৯৬৩ )

২. হযরত সালমান (রাঃ)থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি জুমআর দিন গোসল করে, যতদূর সম্ভব পবিত্রতা অর্জন করে, নিজের তেল থেকে তেল ও নিজের ঘরের সুগন্ধী থেকে সুগন্ধী মাখে, অতঃপর নামাযের জন্যে এমনভাবে বের হয় যে কোন দুই ব্যক্তির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে না, অতঃপর যে নামায ফরজ করা হয়েছে তা পড়ে, অতঃপর ইমাম যা বলেন তা মনোযোগ দিয়ে শোনে, তার ঐ জুমআ ও পরবর্তী জুমআর মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’
(বুখারী ও নাসায়ী শরিফ)

জুমার দিনে মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করুন

মুসলিম উম্মাহর নিকট জুমার দিন সপ্তাহের বাকি ছয়টিদিনের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং আল্লাহ তা’য়ালা এই দিনকে বানিয়েছেন যথেষ্ট মর্যাদা ও সম্মানের। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, “হে ঈমানদ্বারগণ! যখন জুমার নামাজের জন্য আহবান করা হয়, তখন দ্রুত আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও, এবং ব্যবসাবাণিজ্য পরিত্যাগ করো। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে পারো”। সূরা জুমা’হ।
বরকতময় এই দিনে আল্লাহ তা’য়ালা মৃত গোনাহগার বান্দাকে মাফ করেন।

আর জুম্মারদিনে আল্লাহর নিকট মৃতব্যক্তিদের জন্য দোয়া করার উত্তম কালিমাগুলো হলো এইঃ

(১) ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺍﻓﺴﺢ ﻟﻪ ﻓﻲ ﻗﺒﺮﻩ ﻣﺪ ﺑﺼﺮﻩ ، ﻭ ﺍﻓﺮﺵ ﻗﺒﺮﻩ ﻣﻦ ﻓﺮﺍﺵ ﺍﻟﺠﻨﺔ
হে আল্লাহ! দৃষ্টির প্রশস্ততা সমান তার কবরকে বিস্তৃত করে দাও,তার কবরকে জান্নাতের বিছানা বানিয়ে দাও।

(২) ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﻋﺬﻩ ﻣﻦ ﻋﺬﺍﺏ ﺍﻟﻘﺒﺮ
আল্লাহ! তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করো।

(৩) ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺍﻣﻸ ﻗﺒﺮﻩ ﺑﺎﻟﺮﺿﺎ ﻭ ﺍﻟﻨﻮﺭ ، ﻭ ﺍﻟﻔﺴﺤﺔ ﻭ ﺍﻟﺴﺮﻭﺭ
হে আল্লাহ! তার কবরকে তোমার সন্তুষ্টি ও নূর দ্বারা পরিপূর্ণ করে দাও এবং সেখানে আনন্দ ও নির্মলতায় ভরে দাও।

সুবহানআল্লাহ!

আল্লাহ্ পবিত্র জুমুআর দিনে
আমাদের সবাইকে কবুল করে নিন। আমিন।

﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Bohemian's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Bohemian's Diary" (former, Dhumkeatu's Diary) || 06.11.2019 || 🇧🇩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা...

**প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা... ১) মন শুধু মম ছুঁয়েছে- সোলস ২)নিঃস্ব করেছ আমায় - শাফিন ৩)ফিরিয়ে দাও- মাইলস ৪)শ্রাবনের মেঘগু...