সময়টা ইন্টারে পড়াকালে। আমি এতটা উশৃঙখলও ছিলাম না অবশ্য। তখন থেকেই মাথায় ওড়না বা স্কার্ফ পড়তাম, যদিও সেটা আসলে পর্দা ছিল না, মানুষ ভালো মনে করবে, দেখতে সুন্দর লাগত তাই পড়তাম।
.
আবেগের বয়স। চারিদিকে রোমিউ জুলিয়েটের সমাহার আমার নিষ্পাপ আবেগকে ঘিরে ফেলল। পরে গেলাম ওর প্রেমে...ভালোবেসে ফেললাম নিজের চেয়েও বেশি! ও ছিল আমার দিন রাত। ওকে নিয়েই আমার পুরো পৃথিবী। বসন্তের হাওয়ার মতই এক সুন্দর সম্পর্ক চলছিল আমাদের মাঝে। কখনো হাসি কখনো বা কান্না, সব মিলিয়েই। বাবা মায়ের চোখ ফাকি, আর ফ্রেন্ডদের ইন্সপায়রেশনে ভালই চলছিল আমাদের ভালোবাসা আর খুনসুটি। কিন্তু অন্য সবার মত আমাদের সম্পর্কেও এলো সেই কালো রাত্রি। হয়ে গেল হঠাৎ ওর সাথে খুব ঝগড়া। সামান্য ভুল বুঝাবুঝি তিলকে তাল বানিয়ে ফেলল। দিলাম রাগ করে সব যোগাযোগ বন্ধ। এতদিন ওর কথা মত চলেছি, ওর ভালো লাগত বলে স্কার্ফ করেছি, কি না করেছি!! কিন্তু এবার রাগের মাথায় ওর সব অপছন্দের কাজ গুলো করা শুরু করলাম। চুল কাটলাম, চুল খুলে ঘুরে বেড়ানো শুরু করলাম, ফেবুর ওয়াল ভরিয়ে ফেললাম সেলফি দিয়ে, ছেলে মেয়ে সব বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কাটাতে থাকলাম ব্রেক আপময় বিতৃষ্ণ জীবনটা!!
.
কোনো এক রাতের "সরি" শব্দে আবার সব ঠিকঠাক হয়ে গেল। যেন আমার আকাশার চাঁদ ফিরে এসেছে!! লাগামহীন হয়ে গিয়েছিলাম বলে ওর কাছে যদিও খুব বকা খেয়েছিলাম। কিন্তু পরক্ষণের আবারো ডুবে গেলাম ভালোবাসা নামক নেশার সাগরে। অন্তর জুড়ে যেন রজনী গন্ধা ফুল বিছিয়ে দিয়েছে ও!! তাই আবার ওর ভালো লাগা অনুযায়ী চলা শুরু করি। সেই তথাকথিত হিজাব গায়ে দেই।
.
আমি জানতাম এ হিজাব আল্লাহ তা'আলা ফরজ করেছেন নারী জাতির উপর। তাই দুই দিন পর পর হঠাৎ মনে হত "কি করছি এসব!" সব ওকে খুশি রাখার জন্য করছি। কেন? যে সৃষ্টিকর্তা আমাকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছে তাঁকে তো কখনো খুশি করার চেষ্টা করি নি। না জানি আমার রব আমার প্রতি কতটা অসন্তুষ্ট!! যার খাই যার পরি, যার নিরাপত্তায় প্রতি কদম ফেলি, যার অনুগ্রহে প্রতিটা নিশ্বাস ফেলি, তাকেই ভুলে রইলাম!! সে কি আমার ভালোবাসা পাবার অধিক হকদার ছিলেন না?! তাই নামাজ শুরু করি পাঁচ ওয়াক্ত। পাশাপাশি অবসর সময়ে কিছু ইসলামি বই পড়া।
.
এই দিকে খেয়াল করলাম, বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে যতই রোমান্স থাকুক, শান্তি নেই!! প্রতি সপ্তাহে প্রতি মাসে কোন না কোন বিষয়ে থাকেই ভুল বুঝাবুঝি, ঝগড়া!! এই অল্প বয়সে যত্ত ফ্রেন্ডদের দেখেছি প্রেম করতে, তাদের বাহ্যিক রোমান্সটাই কেবল ছিল সুন্দর, ভিতরে ভিতরে কাউকে দেখিনি শতভাগ সুখে আছে। সুখে থাকবে কি করে!? সুখ তো আল্লাহর দান। আল্লাহ যেখানে অসন্তুষ্ট সেখানে কার ক্ষমতা আছে সুখ আনার?! তাহসান মিথিলা?! ওরা নিজেরাই তো পারেনি নিজেদেরকে ধরে রাখতে।
.
আলহামদুলিল্লাহ সেই থেকে পরিপূর্ণ পর্দা করলাম। যখন জানলাম বিয়ে বহির্ভূত প্রেম হারাম, তখন ওর কাছ থেকে সরে আসার চেষ্টা করলাম। কিন্তু পারলাম না। আবার ও যোগাযোগ হল। কিন্তু প্রতি নিয়ত আমার ইবাদাত, আমার ইলম আমাকে প্রশ্ম বিদ্ধ করত "কিভাবে সব জেনে বুঝে হারামে আরাম খুজছি? আল্লাহই যদি সুখ না দেন, কিভাবে সুখ আসবে?! " তাই মানসিক ভাবে খুব অশান্তিতে ছিলাম।
ওকে বিয়ের জন্য প্রেসার দেই। বাট ও রাজি না। আরো সময় চায়, তিন বছর! ওকে বুঝাই যে আমার নিজেকে পাপী লাগে। কিন্তু ও বুঝে না; বা বুঝতে চায় না। শেষ বারের মতো এক বড় ভাইকে দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। বলেছিলাম যে অন্তত বিয়েটা করি; তাকে আমার কোন দায়িত্ব নিতে হবে না। সে তাতেও রাজি না। আবার আমার সাথে হারাম সম্পর্কও রাখতে চায়। তাহলে যখন বিয়েই করা যায় না, তখন প্রেম কেন করতে হবে?! বিয়ের পর্যন্ত কেন এই আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা গেল না?! এই ভালোবাসা তো তাহলে নিজের নাফসের আনন্দের জন্যে, প্রিয় ব্যক্তির জন্য নয়। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভুলে থাকতে পারে, সে কিভাবে আমাকে বিয়ের পরেও এই আবেগ ধরে রাখবে?! তার জীবনে আমার চাইতে আল্লাহর বেশি ভূমিকা। সে তো বাচ্চা নয়, তাহলে কেন বুঝে না আল্লাহই প্রকৃত ভালোবাসার হকদার?! নিশ্চয়ী এটা ক্ষণস্থায়ী আবেগ ছাড়া কিছুই নয়। এখানে বিবেকের স্থান নেই। শয়তান এই আবেগকেই কাজে লাগাচ্ছে।
তাই আল্লাহকে খুশি রাখার জন্য ফোন নাম্বার চেঞ্জ করে ফেললাম। সব দ্বীন থেকে গাফেল বন্ধু বান্ধবের সাথেও যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম।
.
এখনো মাঝেমাঝে ওর জন্য খারাপ লাগে। বাট যখন আমার জীবনে আল্লাহর অনুগ্রহ নিয়ে চিন্তা করি, তখন বুঝি আমি ওর চেয়ে আমার আল্লাহকে বেশি ভালোবাসি। এখন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই আমার ভালোবাসা, চূড়ান্ত লক্ষ্য। আল্লাহর কাছে প্রতিনিয়ত অতীত পাপের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি। জানি না আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন কিনা! তবে আমি তাঁর রহমতের আশাবাদী। এটা বিশ্বাস করা শুরু করেছি যে আমার জন্য যা ভাল আল্লাহ সেটাই দিবেন। তিনি কখনোই আমার জন্য অকল্যাণকর এমন কিছু দিবেন না। যতই বিপদ আপদ কষ্ট আসুক, মুমিনের তো আল্লাহর পথে সামান্য কাটা বিঁধলেও সাওয়াব। এটাই তো মোক্ষম সুযোগ নিজের চাওয়া পাওয়াকে আল্লাহর রাহে মাটি করে তাঁর চির সন্তুষ্টি অর্জন করার!! জান্নাতে দাখিল হবার!! কাল কিয়ামতের ময়দানে তো কোনো প্রেমিক প্রেমিকা কারো কাজে আসবে না। এখনি সুযোগ চোখের সামান্য অশ্রু ফোটা দিয়ে জাহান্নামের আগুন নিভিয়ে দেবার!!
.
হে আল্লাহ! আমাকে তোমার জন্য করে নাও, আর তুমি আমার জন্য হয়ে যাও..
আমি ফিরে এসেছি ইয়া রব!! আমি ফিরে এসেছি তোমার দ্বারে!! আমাকে দিয়ো না গো ফিরিয়ে... ইয়া মাওলা!!
.
#মাওলার_তরে_নিজেকে_মিটিয়ে_দেবার_গল্প
#আল্লাহর_কাছে_আসার_গল্প
.
[কালেক্টেড ফ্রমঃ অাল্লাহর কাছে আসার গল্প ]
﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]
﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋
*** N.B : [All the post on this blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Bohemian's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]
*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷
*** Posted by : © "Bohemian's Diary" (former, Dhumkeatu's Diary) || 24.02.2020 || 🇧🇩
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন