সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

যে দশটি বই জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত

জর্জ এলিয়টের সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস ‘মিডলমার্চ’ বইটি বিবিসির রেডিও ফোরকে এমন দারুণ কিছু মোটা মোটা বই পড়ার কথা ভাবতে বাধ্য করেছে। যে উপন্যাসগুলো বিশাল হয় সেই মোটা বইগুলো সামলানো বা সেগুলো পড়ার ক্ষেত্রে অনেকের অনীহা দেখা যায়। আসলে অনীহার কিছু নেই। বিশেষত ই-রিডারের যুগে হাজার হাজার-শব্দকে পকেটে নিয়ে চলা কোন সমস্যা নয়।

এখানে সাহিত্যের কয়েকটি দুর্দান্ত উপন্যাসের নাম দেয়া হল যা সবার তালিকায় যুক্ত করা উচিত।

১. হারম্যান মেলভিলের ‘মোবি-ডিক (দ্য হোয়েল)’ (৭২০ পৃষ্ঠা)

তালিকাটি শুরু করছি ছোট একটি ৭২০ পৃষ্ঠার বই দিয়ে, এটি আমেরিকান লেখক মেলভিলের এক অনবদ্য সৃষ্টি। মোবি-ডিকের গল্প তার কেন্দ্রীয় চরিত্র আহাবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। আহাব হলেন, হোয়েলিং শিপ ‘পিকোড’এর ক্যাপ্টেন।

তিনি একটি বিশালাকার হোয়াইট স্পার্ম তিমির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কারণ এই তিমি তার হাঁটুর নীচ থেকে পায়ের অংশ নিয়ে গেছে। এজন্য তিনি পাগলের মতো সাগরে সেই তিমির অনুসন্ধান করে চলেন।

গল্পের বর্ণনাকারী হলেন ইসমায়েল নামে এক নাবিক। এবং এই সাহিত্যে অন্যতম জনপ্রিয় প্রথম লাইনটি হল: আমাকে ইসমায়েল বলে ডাকুন। বইটি অদ্ভুত, পাণ্ডিত্যপূর্ণ, মজার, গভীর অর্থবহ এবং আমেরিকার অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস হিসাবে বিবেচিত।

২. হানিয়া ইয়ানাগিহারার ‘আ লিটল লাইফ’ (৭৩৬ পৃষ্ঠা)

এই বইটি ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে চার বন্ধুর জীবনের গল্পকে ঘিরে। কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে তারা অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে নিউ ইয়র্ক সিটিতে যায়।

জেবি হলেন শিল্পী, উইলিয়াম একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেতা এবং ম্যালকম একজন স্থপতি। তবে জুড – নিজেকে ক্ষতি করতে চাওয়া একজন আইনজীবী। যার রয়েছে একটি রহস্যময় অতীত- বইটি জুডের এই গল্পেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।

গল্পটি যতোই এগিয়ে যায়. জুডের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি ততোই প্রকাশ পেতে থাকে। গল্পটি মারাত্মক কষ্টের এবং মন খারাপ করে দেয়ার মতো।

যেখানে কয়েক দশকের ঘটনা বলা হয়েছে এবং বইটির শেষ পৃষ্ঠাগুলো পড়ার সময় আপনার চোখ বেয়ে কান্না আসবেই।

৩. জর্জ এলিয়টের ‘মিডলমার্চ’ (৮৮০ পৃষ্ঠা)

বইটি এলিয়টের মাস্টারপিস হিসাবে বিবেচিত, উপন্যাসটি’ মিডলমার্চ’ নামে একটি কাল্পনিক শহরের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের জীবন নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে।

ভদ্র সম্প্রদায়ের ভূমি মালিক থেকে শুরু করে খামার শ্রমিক বা কারখানার শ্রমিক পর্যন্ত সবার কথাই জায়গা পেয়েছে এই বইটিতে। তবে মূল ফোকাস ছিল দুটি চরিত্রকে ঘিরে, একজন হলেন জেদি এবং দৃঢ়-ইচ্ছাশক্তি সম্পন্ন ডোরোথিয়া ব্রুক এবং অপরজন আদর্শবাদী টারটিয়াস লিডগেট।

তারা দুজনেই বিপর্যস্ত বৈবাহিক জীবনের শিকার ছিলেন। বইটি ১৯শতকে লেখা হলেও এতে রয়েছে অবিশ্বাস্যরকম আধুনিকতা বোধ।

কারণ বইটিতে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির সীমাবদ্ধতা এবং এই ত্রুটিপূর্ণ দুনিয়ায় একজন নৈতিক ব্যক্তি হয়ে ওঠার পথে নানা সংগ্রামের মতো বড় থিমগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

৪. চার্লস ডিকেন্সের ‘ব্লিক হাউস’ (৯২৮ পৃষ্ঠা)

‘ব্লিক হাউস’ হল ডিকেন্সের দীর্ঘতম উপন্যাস। বইটি জার্নডাইস পরিবারের গল্পকে ঘিরে লেখা হয়েছে। যাদের আশা উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পদ পাওয়া। কিন্তু সেই স্বপ্ন বার বার ব্যর্থতার মুখে পড়ে। কারণ জার্নডাইস অ্যান্ড জার্নডাইস মামলাটি দীর্ঘকাল ধরে আইনি মারপ্যাঁচের মধ্যে চলছে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। মামলাটি এতোটাই জটিল হয়ে পড়েছে যে এখন বেঁচে থাকা উত্তরাধিকারদের কেউ এই মামলার কিছু বুঝতে পারে না।

ডিকেন্স এই বইটিতে ‘কোর্ট অব চ্যান্সেরি’ নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন, এই আদালতে একটি মামলা কয়েক দশক ধরে চলতে পারে।উপন্যাসটিতে রয়েছে অসংখ্য চরিত্র এবং বেশ কয়েকটি পার্শ্ব কাহিনিও রয়েছে।

৫. মিগুয়েল ডি সার্ভান্তেসের ‘ডন কিয়োটে’ (৯৭৬ পৃষ্ঠা)

ডন কিয়োটে একজন মধ্যবয়সী স্প্যানিশ ভদ্রলোক, যিনি বীরদের অনেক রোম্যান্স গাঁথা পড়েন। সেই থেকে তিনি তলোয়ার তুলে একজন ভবঘুরে বীর হয়ে ওঠার সিদ্ধান্ত নেন। নিজের পুরানো ঘোড়া এবং বাস্তববাদী মানসিকতা নিয়ে বিশ্বব্যাপী অভিযাত্রার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। ।

ডন কিয়োটের “বীরত্বপূর্ণ” কাজের মধ্যে রয়েছে উইন্ডমিলের সাথে লড়াই করার চেষ্টা করা, যেগুলোকে তিনি দৈত্য ভেবে ভুল করেছিলেন এমনকি তিনি এক পাল ভেড়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন। এই প্রভাবশালী সাহিত্যকে প্রায়শই প্রথম আধুনিক উপন্যাস হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

৬. ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসের ‘ইনফিনিট জেস্ট’ (১০৭৯ পৃষ্ঠা)

ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসের এই মহাকাব্যটি অদূর ভবিষ্যতের ডিস্টোপিয়াকে ঘিরে লেখা হয়েছে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো এই তিন দেশ উত্তর আমেরিকান জাতিগত সংস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়।

ডিস্টোপিয়া হল সাহিত্যের একটি শাখা। যেখানে এমন একটি কাল্পনিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো নিয়ে কথা বলা হয় যেখানে কেবল দুর্ভোগ আর অবিচারের রাজত্ব।

মূল গল্পটি শুরু হয় একটি টেনিস একাডেমি এবং মাদকাসক্ত নিরাময় সংস্থাকে কেন্দ্র করে। মূল প্লট লাইনটি হল “ইনফিনিট জেস্ট” শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র দেখার আকাঙ্ক্ষা। যা দর্শকদের অনুভূতিহীন শিথিল অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।

বইটি, এর পরীক্ষামূলক কাঠামোর জন্য বেশ জনপ্রিয়: এখানে ৩৮৮টি এন্ডনোটস রয়েছে যার মধ্যে কয়েকটির নিজস্ব পাদটীকা রয়েছে।

৭. লিও টলস্টয়ের ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’ (১২৯৬ পৃষ্ঠা)

টলস্টয়ের মহাকাব্যটি রাশিয়ার নেপোলিয়ন যুগকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্র এবং হোম ফ্রন্টের মধ্যে তিনটি কুখ্যাত চরিত্রকে ঘিরে গল্প এগিয়ে যায়।

চরিত্র তিনটি হল: পেরে বেজুখভ, একজন কাউন্টের অবৈধ পুত্র যিনি নিজের উত্তরাধিকারের জন্য লড়াই করছেন; প্রিন্স আন্দ্রেই বলকনস্কি, যিনি নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তাঁর পরিবারকে ছেড়ে চলে এসেছেন; এবং নাতাশা রোস্তভ, একজন অভিজাত ব্যক্তির সুন্দরী অল্পবয়সী মেয়ে।

টলস্টয় একইসাথে সেনাবাহিনী এবং অভিজাতদের উপর যুদ্ধের প্রভাব কেমন হয়, সেটা ফুটিয়ে তুলেছেন। (যদি বইটিকে খুব দীর্ঘ বলে মনে হয় তবে আপনি বিবিসি অ্যাডাপটেশনের সাহায্য নিতে পারেন)

৮. স্টিফেন কিং এর ‘দ্য স্ট্যান্ড’ (১৩৪৪ পৃষ্ঠা)

দ্য স্ট্যান্ড বইটি হল একটি পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপটিক হরর-ফ্যান্টাসি ঘরানার বই। যেখানে বায়োলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার বা জৈব যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন অসুখ বিসুখের দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবাণু নিয়ে গবেষণা করার কথা বলা হয়।

দুর্ঘটনাক্রমে সেই জীবাণুগুলো একদিন একটি সুরক্ষিত গবেষণাগার থেকে বের হয়ে যায়। এবং এই মহামারীতে বিশ্বের ৯৯% এরও বেশি মানুষ মারা যায়।

বইটির দুটি বিকল্প সমাপ্তি রয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রথম প্রকাশিত ৮০০-পৃষ্ঠার মূল সংস্করণে সমাপ্তি ছিল এক রকম।

সেই সময় প্রকাশকরা এর চাইতে বড় পাণ্ডুলিপি মুদ্রণ করতে পারতেন না। তবে ১৯৯১ সালের পরে, কিং-এর পূর্ণ, অপরিবর্তিত সংস্করণ প্রকাশ করা হয়, যা ভক্তদের মধ্যে আরও আশার সঞ্চার করে।

একটি বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত যে, আপনি যে সংস্করণটি পড়েন না কেন, সেজন্য আপনাকে দীর্ঘ সময় সিটে বসে থাকতে হবে।

৯. বিক্রম শেঠের ‘এসুটেবল বয়’ (১৫০৪ পৃষ্ঠা)

শেঠ-এর বিশাল উপন্যাসটি ১৯৫০-এর দশকের গোড়ার দিকে, স্বাধীনতা-উত্তর, ভারতবর্ষ বিভাজনের পরের প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা হয়েছে। যেখানে চারটি একান্নবর্তী পরিবারের ১৮ মাসের গল্প তুলে ধরা হয়।

গল্পের চরিত্র মিসেস রুপা মেহরার একমাত্র মেয়ে লতার জন্য একজন “উপযুক্ত পাত্র” খুঁজে পাওয়ার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়ে যায়।

১০. মার্সেল প্রুস্টের ‘ইন সার্চ অব লস্ট টাইম’ (৩০৩১ পৃষ্ঠা)

হ্যাঁ, আপনি এটি সঠিকভাবে পড়েছেন। প্রাউস্টের মহাকাব্য ‘আ লা রিচার্চে দু টেম্পস পারদু’ (মূল ফরাসী শিরোনাম) বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। যাকে ১৩টি ভলিউমে ভাগ করা হয়েছে। বইটির মোট শব্দ সংখ্যা প্রায় ১৩ লাখের মতো।

মূলত, এটি এখন পর্যন্ত দীর্ঘতম উপন্যাস হিসাবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। এই বইটির সারসংক্ষেপ দেয়ার চেষ্টা করাও হবে ভুল।

তবে সংক্ষেপে বলতে গেলে বইটির গল্প লেখকের শৈশবের স্মৃতি এবং যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।লেখক তার পুরো গল্পে সব সময় উদ্বিগ্ন থাকেন এই ভেবে যে তার সময় প্রতিনিয়ত হারিয়ে যাচ্ছে এবং এই পৃথিবীর আসলে কোনও অর্থ নেই। এই বইটি পড়তে আপনাকে অনেক, অনেক বেশি সময় দিতে হবে। সূত্র-বিবিসি।

*Collected.

﹋﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog "Bohemian's Diary" (former, Dnumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Bohemian's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Bohemian's Diary" (former, Dhumkeatu's Diary) || 24.02.2020 || 🇧🇩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা...

**প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা... ১) মন শুধু মম ছুঁয়েছে- সোলস ২)নিঃস্ব করেছ আমায় - শাফিন ৩)ফিরিয়ে দাও- মাইলস ৪)শ্রাবনের মেঘগু...