শনিবার, ১৬ জুন, ২০১৮

Pomodoro: ঝটপট কাজ এগিয়ে নেওয়ার অসাধারণ এক কৌশল!

* পড়াশোনার টিপস :

পড়তে বসে কতোবার এমন হয়েছে- বইয়ের পাতার দিকে তাকিয়ে আছো ঘন্টার পর ঘন্টা, অথচ পড়া একটুও আগাচ্ছে না? আমাদের সবার সাথেই কমবেশি এমনটা হয়। ভাবো তো একবার, কেউ যদি এমন কোন উপায় বাতলে দিতো যাতে তোমার পড়ালেখা একদম অল্প সময়ে ঝটপট এগিয়ে যেত! তাহলে কি মজাই না হতো! শুধু কি তাই? পড়ালেখা ছাড়াও যে কোন কাজে কম সময়ে সবচেয়ে ভাল ফলাফল পেতে পমোডরো (Pomodoro Technique) ভীষণ মজার ও সহজ একটি পদ্ধতি।

* পমোডরোর মানে :

Francesco Cirillo নামের ইউরোপের এক গুণী ব্যক্তি আশির দশকের শেষ দিকে উদ্ভাবন করেন মজার এই কৌশল। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তখন তাঁর একটা টাইমার ছিলো দেখতে একদম টমেটোর মতোন। তা থেকেই এই কৌশলের সূচনা, তাই নামটাও রাখলেন টমেটো আকৃতির টাইমারটির নামেই! Pomodoro একটি ইতালিয়ান শব্দ, যার অর্থ টমেটো!

* কিভাবে এটি কাজ করে :

পমোডরো পদ্ধতি খুব সহজ! একটি টাইমার হলেই চলবে। হোক তা তোমার মুঠোফোন, হাতঘড়ি, দেয়ালঘড়ি যা খুশি।

*** টাইমার জোগাড় হয়ে গেছে? চলো এবার জেনে নেওয়া যাক পমোডরোর নিয়মাবলী!

* ধাপ ১:
প্রথমে ঠিক করে নাও কোন কাজটি করবে। ‘অঙ্ক করবো’ এভাবে নয়, “অমুক চ্যাপ্টারের অমুক টপিক করবো” এমন সুনির্দিষ্ট একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করো।

* ধাপ ২:
এবার সেট করে দাও পমোডরো টাইমার ২৫ মিনিটের জন্য!

* ধাপ ৩:
সেটা করা হয়ে গেলে সাথেসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ো লক্ষ্যে পৌঁছাতে, যতক্ষণ না পমোডরো টাইমার ঘোষণা করছে সময় শেষ। খেয়াল করবে কাজের ফাঁকে মাথায় অনেক হাবিজাবি চিন্তা আসছে- কিছু করার নেই, শুরুতে এমন হবেই। সুতরাং নিজেই বিবেচনা করবে- চিন্তাগুলো গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিয়ে হলে ঝটপট ছোট্ট করে কাগজে টুকে আবার তোমার লক্ষ্যে মন দিবে, আর যদি “দেখি তো প্রোফাইল পিকে কেউ কমেন্ট করলো কিনা!” এমন অপ্রয়োজনীয় কিছু হলে ঝেঁটে সরিয়ে দেবে মাথা থেকে তখনই!

* ধাপ ৪:
কাজের মাঝে ডুবে থাকতে থাকতে হঠাৎ দেখবে টাইমার বেজে উঠেছে- ২৫ মিনিট শেষ! একটা পমোডরো সেশন শেষ হলো। এর চেকমার্ক হিসেবে একটা কাগজে ক্রস চিহ্ন (X) দিয়ে রাখো।

* ধাপ ৫:
প্রত্যেকটা সেশনের পর পাঁচ মিনিট বিরতি নাও। এই পাঁচ মিনিট একদম রিল্যাক্স। পড়ালেখা, কাজের চাপ কিচ্ছু নিয়ে ভাবতে হবে না। দুচোখ বুঁজে এলিয়ে পড়ো বিশ্রামে। মনটাকে ভরিয়ে দাও প্রশান্তির ছোঁয়ায়। তারপর আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করো। ফিরে যাও দ্বিতীয় ধাপে।

* ধাপ ৬:
এভাবে চারটি পমোডরো সেশন শেষ হলে একটি লম্বা বিরতি নাও (১৫-২০ মিনিটের)। এই তো শেষ করলে একটি পমোডরো সেট! নতুন একটি সেট শুরু করতে আগের চেকমার্কগুলো মুছে আবার মেতে ওঠো নতুন উদ্যমে আর কাজ শুরু করো একদম প্রথম ধাপ থেকে।
মাথায় রাখতে হবে, একটি সেশনের মাঝে কোনরকম অন্যকিছু করা চলবে না! যে লক্ষ্যে নেমেছো, সেটিতেই গভীর মনোনিবেশ করতে হবে পুরো সেশন জুড়ে। খুব জরুরী কোন কল আসলো, কেউ ডাকলো তোমায়- যতদূর সম্ভব স্থগিত করো। আর যদি একান্তই সম্ভব না হয়, বাদ দাও এই সেশন। পমোডরোর নিয়মই এমন, চেকমার্ক (X) যদি দিতেই চাও, অখন্ড মনোযোগে পার করতে হবে প্রতিটি সেশন। পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাক, লক্ষ্যে পৌঁছানোর তাগিদে তোমাকে ডুবে থাকতে হবে ঝাড়া পঁচিশটি মিনিট!

দেখা গেল যেই কাজ দুইদিনেও শেষ হতো না সেই কাজটিই ঝটপট কমপ্লিট এক ঘন্টায়!

*** কেন পমোডরো এতো জনপ্রিয়?

বিশ্বজুড়ে পমোডরো এত বিপুলভাবে ব্যবহৃত হওয়ার পেছনে বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু কারণ বের করেছেন। পমোডরো যে মনকে বশ মানানোর ভীষণ চতুর এক কৌশল! এছাড়াও আরো মজার মজার ব্যাপার ঘটে এই পদ্ধতির সাহায্যে।

সময়ের সাথে দৌড়ে নয়, তাল মিলিয়ে কাজ করা।
আমরা সবাই সারাক্ষণ সময়ের পিছে ছুটতে থাকি। কাল পরীক্ষা, এখন রাত জেগে এই কয় ঘন্টায় যেভাবে হোক এত এত পড়া শিখতে হবে, অমুক সময়ের ভেতর এত্তগুলো এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে- কতক্ষণ বাকি- একটু পরপর ঘড়ি দেখতে দেখতে মাথা খারাপ হবার জোগাড় হয় আমাদের। অথচ একটু ভিন্ন ভাবে দেখলেই ব্যাপারটা কত আনন্দের হতে পারে! টাইমার সেট করে কাজের ফাঁকে কখন যে পঁচিশ মিনিট পেরিয়ে যাবে টেরই পাবে না তুমি। দেখবে কাজও এগিয়ে যাচ্ছে তরতর করে। এখানেই তো মজা পমোডরোর!

* ক্লান্তি দূর করে :

একটানা কতক্ষণ পড়া যায় বলো তো? টানা ঘন্টার পর ঘন্টা পড়তে গিয়ে মাথা ধরে একাকার, অবসাদে ঘিরে ধরে শরীর, কাজের কাজ আগায় না তেমন কিছুই। তাই পমোডরো টেকনিকে পঁচিশ মিনিট পরপর ছোট্ট একটা বিরতি তোমাকে করে তুলবে সতেজ। এই সময়টুকুর বিশ্রাম মস্তিষ্ককে সাহায্য করবে পড়াগুলো স্মৃতিতে গেঁথে নিতে, পরের সেশনের জন্য নতুন উদ্যমে ভরপুর হয়ে উঠবে তোমার প্রাণশক্তি। একঘেয়েমি দূর করতে তাই জুড়ি নেই পমোডরোর।

* অখন্ড মনোযোগ ধরে রাখে :

পড়তে বসলেই আমাদের মাথায় গিজগিজ করে ফেসবুকে একটু ঘুরে আসতে, বন্ধুকে একটা ফোন দিতে, খেলার স্কোরটা জানতে আরো কত কি! এবং প্রায় সবসময়ই “জাস্ট এইটা দেখেই পড়তে বসছি!” দিয়ে শুরু হয়, তারপর ঘন্টাখানেক পর তুমি আবিষ্কার করো পুরো সময়টাই জলে গেছে! এখানেই পমোডরোর তেলেসমাতি। একটি সেশন সমাপ্ত করতে চাই বাইরের জগতের সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্নতা। পৃথিবীতে আছে কেবল তুমি আর তোমার কাজ। মনোযোগ থাকবে না মানে? একদম অখন্ড মনোনিবেশ হবে এবার পড়ার টেবিলে।

* সময় বাঁচাতে জুড়ি মেলা ভার :

ঘন্টার পর ঘন্টা পড়ার টেবিলে বসে থাকলেই পড়া হয়না। পড়া হয় তখনই, যখন তা শেখা হয়, বুঝা হয়, গেঁথে যায় মস্তিষ্কে। পমোডরোর বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণে খুব কম সময়ে ঝটপট সেরে ফেলতে পারবে কাজ, শেখা হয়ে যাবে পড়া। দিনটাকে উপভোগ করার জন্য অবসরের সময়টাও বেড়ে যাবে এবার অনেক বেশি!

* নিমেষেই বদলে যাবে জীবন! :

আমাদের এক ভাইয়া আছেন, নতুন অফিসে এত এত কাজের চাপে দিশেহারা বোধ করতেন। হঠাৎ কার কাছে সন্ধান পেলেন পমোডরোর, রাতারাতি বদলে গেল সবকিছু ম্যাজিকের মতো! ফাইলপত্র ডেস্কে নিয়ে কানে হেডফোনে খুব মৃদু লয়ে ক্লাসিকাল মিউজিক ছেড়ে টাইমার সেট করে ডুবে গেলেন পমোডরোয়- দেখা গেল যেই কাজ দুইদিনেও শেষ হতো না সেই কাজটিই ঝটপট কমপ্লিট এক ঘন্টায়! সহকর্মীরা তো অবাক! রহস্য আর কিছুই না- পমোডরো! আগে কাজের ফাঁকে একশবার ফোন আসতো, এই সেই কাজে সারাক্ষণ কেউ না কেউ আসা যাওয়া করতো, কাজে ঠিকভাবে মনই বসানো কষ্টকর হয়ে পড়তো। এখন পমোডরো সেশনের সময় যোগাযোগ একদম নিষিদ্ধ, নিশ্ছিদ্র নীরবতায় তাই মাত্র পঁচিশ মিনিটেই কাজ এগিয়ে যাচ্ছে বহুদূর!
ভাইয়ার এই অভিনব অগ্রগতি চোখ কাড়লো সবার, সহকর্মীদের সবার পছন্দের নামে পরিণত হয়ে উঠলো এই পমোডরো! এখন অফিসে প্রায়ই শোনা যায় কান পাতলে, “এই চুপ চুপ! ভাইয়া পমোডরো সেশন করছে!” শুধু এই অফিসটিতেই নয়, বিশ্বের নানা দেশের নানা জাতির সব মানুষের মুখেই আজ পমোডরোর জয়জয়কার!

সত্যিই তো, এত গুণের এত কাজের এত সহজ একটি কৌশল- কেউ ভালো না বেসে কি পারে?

তাই আজই শুরু করে দাও পমোডরো সেশন, ঝটপট বদলে ফেলো কাজের ধারা, উপভোগ করো জীবনটাকে আরেকটু উজ্জ্বলভাবে!

★. Copyright : ©. The 10-Minute Blog!

Author : Tashfikal Sami. He is a diehard wrestling & horror movie fan. Passionately loves bodybuilding, writing, drawing cartoons & a wannabe horror film director. He's currently studying at the Institute of Business Administration (IBA), University of Dhaka.

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** নোটঃ - (আপনার সুবিধামতো সময়ে পড়তে টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখুন। প্রয়োজনীয় মূর্হুতে খুঁজে পেতে পোষ্টটির লিংক সেইভ রাখুন। না হলে পরে আবার খুঁজতে হবে... এবং কোন মন্তব্য দেওয়ার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।)

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

** Note: ® [This is one of my Favorite Bangla Articles. I own none of the content within the post, only the drafting/typing time spent. No copyright infringement intended. The contents of this post are the intellectual property and copyright of their owner(s)/author(s). All content is owned by its respective owner(s)/companies. If you own any of the content and wish for me to remove this post from my personal blog (Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : Where I Wandered Lonely as a Cloud...) please contact me and I will do so. Here this post is provided for educational purposes and personal use only. Thank you.]

*** Image source : ©

﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹌﹌﹋﹋﹌﹋﹌﹋﹋﹌﹋

*** N.B : [All the post on this blog (Dhumkeatu's Diary) is only for Personal Collection/Personal use only. There are no other intention to Plagiarism on any others post or content. Advance apologize for any objection of any Author, Publisher, Blog, Website & the others printing media for posting/re-posting any contents on this Personal Blog - "Dhumkeatu's Diary - A personal online diary : where I Wandered Lonely as a Cloud."]

*** Believe : "Happiness is a Choice & Life is Beautiful."
''Zindagi Na Milegi Dobara." Just keep Livin...!!!
Keep Smile.......!! Happy Living......!!! :) :) :)
Thank You, Good Luck......!!! :) :) :) 🌷🙏🌷

*** Posted by : © "Dhumkeatu's Diary" || 16.06.2018 || 🇧🇩

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা...

**প্রিয় গানের সংক্ষিপ্ত তালিকা... ১) মন শুধু মম ছুঁয়েছে- সোলস ২)নিঃস্ব করেছ আমায় - শাফিন ৩)ফিরিয়ে দাও- মাইলস ৪)শ্রাবনের মেঘগু...